সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নারী বিপ্লবী ও অগ্নিযুগের প্রথম নারী শহিদ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ৯৪তম আত্মাহুতি দিবস উপলক্ষে বুধবার সকাল ১০টায় পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবের সামনে প্রীতিলতার ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সিঞ্চন ভৌমিক। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন আকতার, পাহিয়া আকতার, মোহাম্মদ রাকিব, মোহাম্মদ রবিউল, মোহাম্মদ রাসেল, রতন চৌধুরী ও দীবাকর ঘোষ।
বক্তারা বলেন, ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়ে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার অসাধারণ সাহস ও দক্ষতার পরিচয় দেন। আক্রমণের পর ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রহরে তিনি আত্মাহুতি দিয়ে অমরত্ব লাভ করেন।তাঁরা আরও বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে প্রীতিলতার পূর্বেও নারীরা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ, মাতঙ্গিনী হাজরা ও দেবী চৌধুরাণী। তবে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে প্রীতিলতাকে সমগ্র ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রথম নারী শহিদ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা ইতিহাসগতভাবে বিভ্রান্তিকর। ইতিহাসবিদদের মতে ১৯০৫ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত সময়কে “অগ্নিযুগ” বলা হয় এবং সেই অগ্নিযুগের প্রথম নারী শহিদ হলেন বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার।
প্রীতিলতা ১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাকনাম ছিল ‘রাণী’ এবং ছদ্মনাম ছিল ‘ফুলতারা’। ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সে সময় ক্লাবের প্রবেশপথে লেখা ছিল—“কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ।” এই অপমানজনক ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিপ্লবীরা আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। আক্রমণের সময় পুরুষবেশে প্রীতিলতা কৌশলে বাহিনীকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হলে সঙ্গে সঙ্গেই পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মাহুতি দেন।
বক্তারা বলেন, প্রীতিলতার এ আত্মদান কেবল বিপ্লবীদের সশস্ত্র সংগ্রামকে উৎসাহিতই করেনি, বরং সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার পথে অনুপ্রাণিত করেছে। সভায় পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবকে শুধু নামে নয়, বাস্তবেও জাদুঘরে রূপান্তরের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি বীরকন্যা প্রীতিলতার আত্মাহুতি দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি তোলা হয়।
