১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সাধ্যের বাইরে কাঁচা মরিচের দাম 

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাঁচা মরিচ ছাড়া বাঙালির রান্নাঘর ভাবাই যায় না। সবজি রান্না থেকে সালাদ বানানো- সবকিছুতেই প্রয়োজন হয় সবজিটি। সেই কাঁচা মরিচের দাম যেন সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। দাম বাড়তে বাড়তে এখন সবুজ এই মরিচের দাম ঠেকেছে ২০০টাকায়। এমনিতেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। সেখানে কাঁচা মরিচের ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ সাধারণ মানুষকে আরও চাপে ফেলেছে। নিত্যদিনের রান্নার হিসেব মেলাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। নগরীর দুটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সবখানেই দোকানে আগের মতো কাঁচামরিচ নেই। প্রায় সব দোকানেই অল্প অল্প মরিচ দেখা গেছে। আর সেসব কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার আশপাশে। দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে ক্রেতাদের অনেকেই ১০০-২০০ গ্রাম হিসেবে মরিচ কিনছেন। যদিও এক সপ্তাহ আগেও ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল মরিচ। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে কথা হয় গৃহবধূ হালিমা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, নিত্যদিনের রান্নাবান্নায় কাঁচা মরিচ লাগেই। সেজন্য মরিচ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি ২৫০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দামে। এভাবে যদি সবকিছুর দাম বেড়ে যায়, আমরা কী খাবো?একই চিত্র দেখা গেছে বহদ্দারহাট থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের ২ নম্বর গেটের কর্ণফুলী কমপ্লেক্স মার্কেটে। সেখানেও কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছিল ২০০ টাকায়। তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চাহিদার চেয়ে সরবরাহ অনেক কম থাকায় দাম বেড়েছে।
রিয়াজুদ্দিন বাজারের আড়তেও কাঁচা মরিচ প্রতিকেজির দাম পড়েছে ১৭০ টাকা। আড়তদাররা জানিয়েছেন, বগুড়া, ফরিদপুর, জামালপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চট্টগ্রামে মরিচ আসে। তবে বর্ষার কারণে ওইসব এলাকায় বেশিরভাগ মরিচ গাছ পচে গেছে। সে কারণে মরিচ আসছে কম। শীত মৌসুম আসা পর্যন্ত মরিচের দাম কমার সম্ভাবনা কম।
রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী বলেন, মরিচের দাম বেড়েই চলেছে। এর কারণ চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ অনেক কম। যেমন- আগে ১০ গাড়ি সবজি আসলে এখন আসছে তিন গাড়ি। চাহিদা যদি হয় ৩০০ টন, আসছে ৫০ টন। সে কারণে দামও বাড়ছে। কেন সরবরাহ কম- এমন প্রশ্নে ফারুক শিবলী বলেন, টানা বৃষ্টি পড়েছে। এ কারণে বেশিরভাগ মরিচের উৎপাদস্থল উত্তরবঙ্গে ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। বেশিরভাগ মরিচ গাছ পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। সে কারণে সরবরাহও কম।
অবশ্য দেশে কাঁচা মরিচের উৎপাদনের মৌসুম এখন নয়। সাধারণত নভেম্বর থেকে জুলাই মাসে দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচে চাহিদা মিটে যায়। মরিচের চাহিদা মেটাতে এই সময়ে সরকার আমদানির অনুমতি দেয়। গত জুলাই ও আগস্টে ভারত থেকে মরিচ আমদানি করা হয়। তবে চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় বাজারে সেটার প্রভাব তেমন একটা পড়েনি।

আরও পড়ুন