৩রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র, আসামি ২৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুই দিন আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবর্ষণে এক দোকান কর্মচারী নিহতের ঘটনায় করা মামলার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। চট্টগ্রামে জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের প্রথম কোনো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দিল পুলিশ।অভিযোগপত্রে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে ১২৮ জনকে।গত বুধবার (৩০ জুলাই) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরীর চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক আদালতের প্রসিকিশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দেন। তবে দুইদিন পর শুক্রবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়েছে।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রসিকিউশন শাখা থেকে অভিযোগপত্রটি বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দাখিল করা হয়। আদালত ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।
আসামিদের মধ্যে আরও আছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, পুলক খাস্তগীর, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন এবং নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৩ আগস্ট নগরীর চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাটে দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মো. শহিদুল ইসলাম শহিদ (৩৭)। এ ঘটনায় ১৫ আগস্ট তার ভাই শফিকুল ইসলাম নগরীর চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
আন্দোলনের সময় নিহত শহিদুল ইসলাম শহিদ হত্যা মামলায় তার ভাইয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শহিদ জুতার দোকানের কর্মচারী ছিলেন। গত বছরের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় দোকান থেকে বেরিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় দুষ্কৃতকারীদের গুলিবর্ষণে নিহত হন তিনি।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার প্রবল গণআন্দোলনের মধ্যে গত বছরের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় নগরীর ষোলশহর এলাকায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসভবন এবং বহদ্দারহাট মোড় এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সেসময়কার মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে।সেসময় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল, আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিবর্ষণে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ নিহত হয়েছেন।তবে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বহদ্দারহাটে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে মেয়রের বাসায় হামলা ঠেকাতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছিলো। পুলিশ কোনো গুলি করেনি বলে দাবি করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন