৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জব্বারের বলীখেলার বৈশাখী মেলা জমজমাট

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তরুণ-যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে জব্বারের বলীখেলা শুরু হয় নগরের ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠে। বলীখেলায় চট্টগ্রামের স্থানীয়দের আবেগ ও আগ্রহে গড়ে ওঠে মেলাও। ১১৬ বছর আগে থেকে এ মেলায় বিভিন্ন অঞ্চলের সেরা জিনিসপত্র এনে বিক্রি করেন বেপারিরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও বসেছেন তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দর্শনার্থী অনুযায়ী বেচা-বিক্রি খুবই কম।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর দুটা থেকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আন্দরকিল্লা মোড় থেকে ফুলঝাড়ু, তালপাতার পাখা দিয়ে শুরু মেলার। এতো মানুষ যেন এক কদম পা ফেলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে অন্য পা আগানোর। অধিকাংশ দর্শনার্থীরা দোকানে দোকানে দেখছেন তাদের পছন্দের পণ্য। বেতের তৈরি জিনিস, মাটির তৈরি তৈজসপত্র সবকিছুই সাজানো শুরু হয়েছে থরে থরে। রয়েছে পোড়ামাটির ফুলের টব, জগ, গ্লাস, শোপিস, হাতপাখা, শীতল পাটি, দা, বঁটি, খেলনা, টমটমের গাড়ি, শিমুল তুলা, সংসারের টুকিটাকি থেকে শুরু করে ফলসহ গাছের চারা। খেলনা, গহনা, কাপড়ের পর্দা, মেয়েদের জামা, পুরুষের লুঙ্গি, দা, বটি, ছুরি, লোহার কড়াই, হামানদিস্তাসহ ঘরের প্রয়োজনীয় সব জিনিস বিক্রি হচ্ছে এই মেলায়। তবে বেচাকেনা খুব কম হওয়ায় অধিকাংশ বেপারিরা হতাশ।
চকরিয়া থেকে ফুলঝাড়ু নিয়ে আসা সেলিম বলেন, ‘দুই হাজারের মতো ফুলঝাড়ু নিয়ে আসছি। গতকাল মাল (ঝাড়ু) ঢুকাতেই রাতের দুইটা বেজেছে। জোড়া দেড়শ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করছি। সকাল থেকে পাঁচশতের মতো বিক্রি করেছি। অন্য সময় বিক্রি ভালো হতো।’
বাঁশখালী থেকে তালপাতার হাতপাখা নিয়ে আসা রমিজ বলেন, ‘জোড়া দেড়শ থেকে দুইশ টাকায় বিক্রি করছি। মানুষের মনে হয় পাখা লাগে না। তাই বেচা বিক্রি নাই বললেই চলে। দুইশ পিসের মতো পাখা এনেছি। এখন পর্যন্ত বিশটাও বিক্রি হয় নাই।’
অন্যদিকে বান্দরবান থেকে ফুলঝাড়ু নিয়ে আসা হোসেন প্রতিবেদককে ব্যবসায়ী ভেবে বলেন, ‘ভুল করেও বসিয়েন না। এখানে আমরা এসে ফেঁসে গেছি। একটাতে ১০ টাকাও লাভ করতে পারছি না। জোড়া ২০০ টাকায় বিক্রি করছি। আর মানুষ চারটা দুইশ টাকায় চাচ্ছে। আর যতো ফোরইন (ফুলঝাড়ু) বেপারি আসছে, এতো ক্রেতাও নাই।’
টেরিবাজার আসতেই দেখা যায়, সেখানকার দোকানিরা রাস্তায় বসেছেন বিভিন্ন কাপড় নিয়ে। তারা বলছেন, কম দামের কাপড়গুলোর ভালো চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে বোরখার ওড়না, থ্রি পিস ও লুঙ্গি বিক্রি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বিক্রি একটু কম। তবে বিকেলের পর থেকেই বিক্রি শুরু হবে।
রাস্তার মাঝে বিক্রি হচ্ছে শরবত, আইসক্রিম সহ বিভিন্ন ধরনের খাবার। তিলের ট্রফি, চালের গুড়ের জিলাপি, বাদামের ট্রফি, বুট, বাদাম, নিমকি, বাতাসা, মুড়ির মোলার বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে বসা বেলাল বলেন, ‘তিলের ট্রফি আর চনামনার ঠ্যাঙ ছাড়া তেমন কিছু বিক্রি হচ্ছে না। এছাড়া ব্যবসা করছে শরবত ও আইসক্রিম বেপারিরা। মানুষ গরমে ওসবই খাচ্ছে।’

আরও পড়ুন