১৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চুলার ধোঁয়া ঘরে ঢোকায় বিতণ্ডা, ‘ভাইয়ের হাতে’ ভাই খুন

অনলাইন ডেস্ক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাটির চুলায় রান্না করার সময় ঘরের মধ্যে ধোঁয়া যাওয়া নিয়ে বিতণ্ডার জেরে ‘বড় ভাই’ ও ‘ভাতিজার’ মারধরে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার এসআই জিয়া উদ্দিন জানিয়েছেন।নিহত মনির সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘীরপাড় গ্রামের খুরশিদ মিয়া ছেলে।সাত বছর ও দেড় বছর বয়সী দুই ছেলে সন্তানের জনক মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ বলছে, রোববার দুপুরে বড় ভাই বাবুল মিয়ার স্ত্রী জুবায়দা বেগম মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া মনিরের ঘরে ঢোকায় তিনি আপত্তি জানান। এতে জুবায়দা উচ্চস্বরে তর্কে জড়ান। তখন তার ছেলে শাওন মিয়া চাচা মনিরের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে।
বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে শাওন হাতে দা নিয়ে মনিরকে মারতে আসে। তখন দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এরপর বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম, তাদের ছেলে ইমন এবং শাওন লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে মনিরকে বেধড়ক পেটান। এক পর্যায়ে ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়।পরে স্থানীয়রা মনিরকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে হামলাকারীরা ‘ফুসলিয়ে’ মনিরকে সরকারি হাসপাতাল থেকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনিরের মৃত্যু হয়।সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, “পরীক্ষা করে কোন স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।”খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রকীব উর রাজা হাসপাতালে যান। ।
নিহতের স্ত্রী জুলেখা বেগম বলছেন, “আমাদের ঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী‌। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকাঝকা করছিল। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে।
“স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে ওরে ধর ‘বেশি করে বাইরা’। তখন বাকিরা লাঠি, কাট ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও আমার স্বামীকে মারতে এসেছিল।”
নিহতের শ্বশুর দুলাল মিয়া বলেন, “ছেলের বড় ভাই সাচ্চু, হোসাইন ও আলামিন, স্থানীয় ইমাম হোসেন, খুরশিদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হুমায়ুন মিয়া, সুলতানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ, ইউপি সদস্য ও উড়শিউড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাজির মিয়া হাসপাতালে ছিল।“মনিরের লাশ তারা জোর করে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। আমি লাশ ধরে রাখায় তারা নিতে পারেনি। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল।”মনিরের মৃত্যুর জন্য বেসরকারি হাসপাতালের যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়াকেও দায়ি করেন তিনি। এসআই জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন