নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে ছিটকে নালায় পড়ে নিখোঁজ শিশুটির মরদেহ ১৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে।শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে চাক্তাই খালের চামড়ার গুদাম এলাকায় আবর্জনার মধ্যে ভেসে থাকা শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়। শিশুটির নাম সেহরিশ। তার মায়ের নাম সালমা বেগম। বাবার নাম মো. শহিদ। তারা নগরীর আছদগঞ্জ এলাকায় থাকেন। চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় মো. শহিদের বোনের বাসা।
দিবাগত রাত ৮টার দিকে ব্যাটারিচালিত একটি রিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হিজড়া খালে তলিয়ে যায়। ওই রিকশায় ভুক্তভোগী শিশুর মা ও নানি ছিলেন। দুর্ঘটনার পর মা ও নানি উঠতে সক্ষম হলেও তলিয়ে যায় ৬ মাস বয়সী ওই শিশুটি। এ সময় রিকশাচালক পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন মা ও দাদিকে উদ্ধার করেন। ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে থাকে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরাও। রাতে ঘটনাস্থলে আসেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি যে উদ্ধার করতে পারবেন তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন।
উদ্ধারকারী যুবক মিজান সাংবাদিকদের জানান, খালের পাড়ে আমার মেয়ের জন্য দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ নিচে তাকাই, আবর্জনার মধ্যে প্রথমে মনে হয়েছিল পুতুল পড়ে রয়েছে। মন মানছিল না। পরে কাছে গিয়ে দেখি শিশুর মরদেহ। আধঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলাম। শরীরে কাঁপন ছুটে যায়৷ ভয়ে উঠে আসি। আরও মানুষকে জড়ো করি। শিশুটির হাত একটা উপরের দিকে ছিল। উদ্ধারের পর কাদামাখা শিশুটিকে খালপাড়ে পানি দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নালায় শিশু নিখোঁজ হওয়ার মর্মান্তিক এ খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জড়ো হন আশপাশের মানুষ। তারা নালায় আবর্জনার স্তূপের কারণে উদ্ধার অভিযানে বিঘ্ন হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চসিক, সিডিএর সমালোচনা করেন। তারা ব্যাটারি রিকশা বন্ধ ও জলাবদ্ধতা নিরসন প্নকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করে খালপাড়ে বেষ্টনি বা রেলিং দেওয়ার দাবি জানান। কেউ কেউ প্রার্থনা করেন নিষ্পাপ শিশুটির জন্য।
