১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রাম বন্দরে সার্ভার বিপর্যয়ে এনসিটি গেট বন্ধ, সড়কে দীর্ঘ যানজট

নিজস্ব প্রতিবেদক: : চট্টগ্রাম বন্দরে সার্ভার বিপর্যয়ের কারণে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ৪ নম্বর গেট বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার দুপুর ১২টা ৩২ মিনিটে এনসিটি-৪ এ ফাইবার অপটিক্যাল তার কাটা পড়ায় চালকদের ই-এন্ট্রি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দাবি, ইপিজেডের কারখানা ছুটি শুরু হওয়ার আগে যদি এটি ঠিক না হয়, যানজট আরও তীব্র হবে।তবে এ সংকট নিরসনে কাজ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। গেট বন্ধ থাকায় শতাধিক গাড়ি বন্দরে প্রবেশ করতে না পারায় নগরের প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
যানজটের তথ্য নিশ্চিত করে ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) মশিউর বলেন, বন্দরের সার্ভার সমস্যার কারণে এনসিটি–৪ নম্বর গেট বন্ধ রয়েছে। এ কারণেই যানবাহন ঢুকতে পারছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। সার্ভার চালু হলেই গেট খুলে দেওয়া হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত যানজটের সমাধান না থাকলেও আমরা চেষ্টা করছি সমস্যা সমাধানের পরপরই যেন গাড়িগুলো দ্রুত চলে যেতে পারে। এছাড়া যারা বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে গন্তব্যে যেতে চাচ্ছেন, আমরা তাদের সহযোগিতা করছি।
তিনি বলেন, বন্দরে নিয়মিত হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। কোনো একটি গেট বন্ধ থাকলে পুরো পরিবহন ব্যবস্থায় বড় ধরনের চাপ পড়ে। এ সমস্যা ইপিজেড ছুটির আগে সমাধান করা সম্ভব না হলে যানজট সামলানো আরও কষ্টকর হয়ে পড়বে। কারণ ৫টা-সাড়ে ৫টার পর থেকে হাজার হাজার শ্রমিক একই সময়ে এই সড়কটি ব্যবহার করবেন।
বন্দরের জটিলতা সমাধানে জানতে চাইলে চবকের নিরাপত্তা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আনিস-উজ-জামান বলেন, ফাইবার অপটিক্যালের তার কাটা পড়ায় এনসিটি-৪-এ কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। তবে এটি সমাধানে কাজ করছে। কত সময় লাগতে পারে তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গেট বন্ধ থাকায় বন্দরমুখী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান সড়কেই আটকে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে আশপাশের সড়কে। বিশেষ করে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে অলংকার মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। কিছু জায়গায় যানবাহন একেবারেই থেমে যায়। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। কাভার্ডভ্যানগুলো নড়তে পারছে না। পাশাপাশি আটকে পড়ে বাস, সিএনজি ও ব্যক্তিগত গাড়িও। এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। শিফটিং ডিউটিতে দায়িত্বরত অফিসগামী মানুষ সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। অনেক যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রওনা দেন। পাশাপাশি স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও বিপাকে পড়েন।
কাভার্ডভ্যান চালক মোজাম্মেল বলেন, পোর্ট কলোনির সামনে দুপুরের থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। এক ইঞ্চিও এগোতে পারিনি। গেটে ঢুকতে না পারলে মাল নামাব কীভাবে? সিএন্ডএফ এজেন্টের কাস্টমস সরকার বাপ্পু দাশ বলেন, প্রতিদিন সময়মতো ডেলিভারি দিতে হয়। এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে বড় আর্থিক ক্ষতি হবে। এতে ব্যবসায়ীরাও সমস্যায় পড়বেন।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, যানজটের কারণে পণ্য সময়মতো আসছে না। একটি সমস্যা হলেই পুরো শহর অচল হয়ে যায় বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায়। তাই বন্দর কর্তৃপক্ষের উচিত, বন্দরে প্রতিটি ক্ষেত্রে কমপক্ষে দুই থেকে তিনটি বিকল্প ব্যবস্থা রাখা। শুধুমাত্র সিস্টেম লসের কারণে এতোগুলো জনবল বেকার হয়ে পড়লে, পণ্য ডেলিভারি আটকে গেলে, সামগ্রিকভাবে দেশের ক্ষতি হবে।

আরও পড়ুন