৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চলতি সপ্তাহে দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন

অনলাইন ডেস্ক : চলতি সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম না কমলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে, কোনো সংকট নেই। পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য সরকার ১০ হাজার হাই ফ্লো মেশিনও সরবরাহ করেছে।’বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ইতিমধ্যে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ২ হাজার ৮০০ আবেদন পড়েছে। আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে বাজারের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে না আসলে আমদানি অনুমোদন ইস্যু করা হবে।’এসময় হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে যাওয়া অযৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।সপ্তাহ ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৭০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।এত দ্রুত দাম বাড়ায় বাজার তদারকির অভাব ও সিন্ডিকেটকেই দুষছেন ক্রেতারা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) জুলাই থেকে অক্টোবর মাসে দেশে পেঁয়াজ এসেছে ১৩ হাজার টন। গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) একই সময় আমদানি ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজার স্বাভাবিক রাখতে সীমিত পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)।ট্যারিফ কমিশন বলছে, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ১১০ টাকায় ওঠায় দ্রুত আমদানির অনুমতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্যসচিব ও কৃষিসচিবকে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। সংস্থাটি সম্প্রতি স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে।
ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান বলেন, ‘কিছু মধ্যস্বত্বভোগী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এই সময়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০ টাকার মধ্যে থাকার কথা, কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকার ওপরে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশে দাম প্রায় ৩০ টাকার মধ্যে। সীমিত পরিমাণে আমদানির অনুমতি দিলে বাজারে সরবরাহ বাড়বে, মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমবে এবং ভোক্তারা যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।’কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেঁয়াজের উচ্চ দামের সুবিধা কৃষক পাচ্ছেন না; বরং মধ্যস্বত্বভোগীরাই মূল সুবিধাভোগী। তাই দ্রুত আমদানির অনুমতি দিলে বাজারে ভারসাম্য আসবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরে দেশে ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও সংরক্ষণ সমস্যাসহ নানা কারণে প্রায় ১১ লাখ টন নষ্ট হয়েছে। বাজারে এসেছে ৩৩ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ। একই সময়ে চার লাখ ৮৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানির ৯৯ শতাংশই আসে ভারত থেকে।

আরও পড়ুন