অনলাইন ডেস্ক : জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সানায়ে তাকাইচিকে নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছে। সংসদে প্রয়োজনীয় সমর্থন পেলে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হবেন ৬৪ বছর বয়সী তাকাইচি। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্ষুব্ধ জনসাধারণের আস্থা পুনরুদ্ধার করার জন্য লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) তাকাইচিকে নির্বাচিত করেছে। যুদ্ধ-পরবর্তী প্রায় সমগ্র সময় জাপান শাসন করছে এলডিপি।পাশাপাশি দলটি বিরোধী দলগুলোর প্রতি আকৃষ্ট জনগণকে নিজেদের দিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। বিরোধী দল অভিবাসীদের ওপর প্রণোদনা ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
শনিবার (৪ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার ভোটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কোইজুমির ছেলে শিনজিরো কোইজুমিকে পরাজিত করেন তাকাইচি। শিনজিরো সবচেয়ে কম বয়সী আধুনিক নেতা হওয়ার জন্য দৌড়ে ছিলেন।এর আগে প্রথম দফায় পাঁচ প্রার্থীর কেউই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার স্থলাভিষিক্ত নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে ১৫ অক্টোবর ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার আশা করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ভোটাভুটিতে তাকাইচির পক্ষে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।অর্থনীতি ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ের প্রাক্তন মন্ত্রী হিসেবে তাকাইচি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির সম্প্রসারণমূলক নীতির পরিকল্পক।
তিনি এখন এমন একটি দল পরিচালনা করবেন যে দলটি সংকটে রয়েছে। সম্প্রসারণবাদী ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর দ্য পিপল এবং অভিবাসন-বিরোধী সানসেইতোসহ অন্যান্য বিভিন্ন দল ক্রমাগত ভোটারদের, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের এলডিপি থেকে দূরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।গত বছরে ইশিবার নেতৃত্বে এলডিপি ও জোট অংশীদার উভয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়, যা ইশিবার পদত্যাগের কারণ হয়। তাকাইচি দ্বিতীয় রাউন্ড ভোটের আগে বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে অনেকেই বলছেন, আমরা আর জানি না এলডিপি আসলে কী প্রতিনিধিত্ব করে। সেই জরুরি বোধই আমাকে প্রেরণা জুগিয়েছে।আমি চাই মানুষদের দৈনন্দিন জীবনের উদ্বেগ ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা থেকে আশা সৃষ্টি করতে।’
মার্গারেট থ্যাচারকে নিজের আদর্শ হিসেবে উল্লেখ করা তাকাইচি কোইজুমির চেয়ে দৃঢ় নীতির প্রস্তাব রেখেছেন এবং প্রভাবশালী হতে পারেন। তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ‘অ্যাবিনমিকস’ নীতির পক্ষপাতী। যে নীতি অর্থনীতি বর্ধনের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি ও সহজ ঋণ নীতি ব্যবহার করে।
তাকাইচি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রাম্প ট্রেড ডিল পুনর্নবীকরণের সম্ভাবনা উত্থাপন করেছেন। জাপানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জর্জ গ্লাস তাকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করে লিখেছেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে জাপান-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করার অপেক্ষায় আছি।’ তবে তার জাতীয়তাবাদী অবস্থান প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য, বিশেষত করে দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের জন্য উত্তেজক হতে পারে।
তিনি জাপানের শান্তিপ্রিয় সংবিধান পুনর্বিবেচনার পক্ষপাতী এবং এই বছর প্রস্তাব করেছেন, জাপান তাইওয়ানকে নিয়ে ‘কোয়াসি-সিকিউরিটি অ্যালায়েন্স’ গঠন করতে পারে।প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তাকাইচি পূর্বসূরীর চেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক সফর করবেন এবং বার্তা দেবেন, ‘জাপান ইজ ব্যাক’। বিজয়ী ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি নিজের কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য ত্যাগ করেছি এবং আমি কাজ করব, কাজ করব, কাজ করব।’সূত্র : রয়টার্স
