২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নগর জুড়ে দেবী বন্দনার প্রস্তুতি : শেষ সময়ে ব্যস্ত মৃৎ শিল্পীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শরৎ ঋতু শুরুর পর থেকে মাঠের ধারে কিংবা নদীর তীরে দুলতে থাকা কাশফুল জানান দিচ্ছে দুর্গাপূজার আগমনী বার্তা। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে দেবী পক্ষের। ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীতে বোধনের মধ্যে দিয়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যে আসবেন দেবী দুর্গা। নগর জুড়ে তাই শুরু হয়েছে দেবী বন্দনার প্রস্তুতি। এবার নগরের ১৬ থানায় ২৯৫টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। শৈল্পিক কারুকার্য আর রঙ তুলির নিপুণ ছোঁয়ায় সেজে উঠছে অনিন্দ্য সুন্দর প্রতিমাগুলো। আর তাঁর ছোঁয়া যেন লেগেছে সনাতনীদের মনেও। মৃৎ শিল্পীদের হাতে সেজে ওঠা এসব প্রতিমা দেখতে এখন থেকেই ভিড় লেগেছে। এনায়েত বাজার গোয়ালপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, তুলির আঁচড়ে প্রতিমার অবয়ব ফুটিয়ে তুলছেন মৃৎশিল্পী বিশ্বজিত পাল। সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশসহ বিভিন্ন প্রতিমা।এছাড়া নগরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে শুরু হয়েছে গেট, প্যান্ডেল এবং সাজসজ্জার কাজও। ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। রঙ আর তুলির আঁচড়ে প্রতিমার অবয়ব ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত প্রতিমা তৈরির কারিগররা। সদরঘাট, এনায়েতবাজার, আগ্রাবাদ, হাজারীলেন, রাজাপুর লেন, চকবাজার, কাট্টলীসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছেন প্রতিমা তৈরির এসব মৃৎশিল্পীরা।
মৃৎশিল্পী বিশ্বজিত পাল বলেন, আষাঢ় মাস থেকেই শুরু হয়েছে আমাদের প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি। প্রথমে বাঁশ, কাঠ, খড়, সূতলি ও মাটি দিয়ে প্রতিমার আকার তৈরি করে শুকানোর জন্য কিছুদিন রেখে দেয়া হয়। মাটি শুকানোর পর শুরু হয় প্রতিমায় রঙের কাজ। বর্তমানে রঙের কাজ প্রায় শেষ। প্রতিমা সাজানো এবং অলঙ্কার স্থাপনের কাজ বাকি আছে।’ এবার তিনি ১৪টি মণ্ডপের জন্য প্রতিমা তৈরি করেছেন তিনি। এর মধ্যে ১২টি কারখানায় এবং দুটি প্রতিমা পূজা মণ্ডপে তৈরি করা হয়েছে।কারখানায় তৈরি এসব প্রতিমা নেওয়া শুরু হবে মহালয়ের পরদিন থেকে ষষ্ঠীর আগ পর্যন্ত।
বিভিন্ন মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তৈরি করা এসব প্রতিমার বেশিরভাগ নিয়ে যাওয়া হবে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে। বাকি প্রতিমা চলে যাবে সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, রাউজান, পটিয়া, কর্ণফুলী, বোয়ালখালীসহ বিভিন্ন উপজেলার পূজামণ্ডপে।
মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক অর্পন কান্তি ব্যানার্জী বলেন, নগরের ১৬ থানায় এবার ২৯৫টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। এরমধ্যে পূজা উদযাপনের প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি থানা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করা হয়েছে।
এর আগে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ও মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মহানগর পূজা পরিষদ। এছাড়া আগামীকাল বুধবার ১৭ সেপ্টেম্বর সিএমপি কমিশনারের সাথে আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় নগর পূজা পরিষদ। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে ২ অক্টোবর দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসব।

আরও পড়ুন