১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনা: বিআইডব্লিউটিএ- চট্টগ্রাম বন্দর সমঝোতা স্মারক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকাস্থ বিআইডব্লিউটিএ এর সম্মেলন কক্ষে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল এককভাবে পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ এর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। উক্ত স্বাক্ষরের মাধ্যমে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল ও তৎসংলগ্ন ৪৮.২৪ একর জায়গা বিআইডব্লিউটিএ হতে প্রচলিত পদ্ধতিতে লিজ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এককভাবে পরিচালনা করবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ ও চবক এর মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিপাক্ষিক সভার সিদ্ধান্ত এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এ চুক্তিটি সম্পাদন হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ২০৩৫ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ বাৎসরিক নবায়নের ভিত্তিতে ১০(দশ) বছর মেয়াদে লাইসেন্স প্রদান করবে। তবে চুক্তির মেয়াদ মোট ৩০ (ত্রিশ) বছর বলবৎ থাকবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৯৫ শতাংশ মালামাল সড়ক পথে পরিবাহিত হয়ে থাকে । এতে সড়কের উপর অত্যাধিক চাপসহ পরিবহন খাতে প্রচুর ব্যয় হয়। নিরাপদ ও সাশ্রয়ী মূল্যে নদীপথে পণ্য পরিবহনকে উৎসাহিত ও ব্যবসাবান্ধব করার লক্ষ্যে পানগাঁও আইসিটিকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে আলোচ্য চুক্তিটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিআইডব্লিউটিএ থেকে দীর্ঘ মেয়াদি সময়ের জন্য জায়গা লিজের মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়েছে । এছাড়াও বন্দর কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পানগাঁও আইসিটিতে একটি ফ্রি কটন জোন গড়ে তোলা হবে যা দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
বিআইডব্লিউটিএ এর সভা কক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এর “পশ্চাদ সুবিধাসহ হেভি লিফ্ট কার্গো জেটি নির্মাণ প্রকল্প” বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। উল্লেখ্য বিষয়োক্ত প্রকল্পটি “অর্পিত ক্রয়কার্য হিসেবে” বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয় সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে উক্ত চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে । প্রকল্পটি লালদিয়া-২ অঞ্চলে বাস্তবায়িত হবে এবং এর দৈর্ঘ্য ২৪০ মিটার ধরা হয়েছে।
দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর হওয়া সত্ত্বেও ইতোপূর্বে এ বন্দরে ভারী কার্গো হ্যান্ডলিং এর জন্য বিশেষায়িত/ডেটিকেইটেড কোন জেটি ও সুবিধাদি নির্মাণ করা হয়নি। এনসিটি বার্থ নং-৫ ভারী কার্গো হ্যান্ডলিং এর জন্য ব্যবহার করা হলেও এটি মূলত কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল । তবে বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল কার্গো বেশি পরিমাণে আমদানী করায় একটি হেভি লিফ্ট কার্গো জেটি নিমার্ণ অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়ে। আলোচ্য প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বন্দর ব্যবহারকারী/ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবী পুরন হবে । হেভি লিফ্ট জেটিটি প্রতি বর্গমিটারে ৫ টন ভার বহন করতে সক্ষম হবে। ইতোপূর্বে ভারী কার্গো হ্যান্ডলিং এর জন্য ব্যবহৃত এনসিটি বার্থ নং-৫ এর সক্ষমতা ছিল প্রতি বর্গমিটারে মাত্র ৩ টন। উল্লেখ্য, কাজের গুণগতমান বজায় রাখার স্বার্থে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে উক্ত প্রকল্পটি নির্মাণে নিযুক্ত করা হয়েছে।
উক্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, নৌপম এর সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, বিআইডব্লিউটি এর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, নৌবাহিনীর পক্ষে রিয়ার এডমিরাল (অবঃ) আনোয়ার হোসেন এবং চবক এর পক্ষে চবক এর সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশীদ ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ও উপ-প্রকল্প পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়ও আরো উপস্থিত ছিলেন নৌপম, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, চবক ও বিআইডব্লিউটিএ এর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

আরও পড়ুন