১৭ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রকল্পের ভৌত কাজ ৬০ শতাংশ শেষ : ফেব্রুয়ারিতে চালু হবে সিটি বাস টার্মিনাল 

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সিটি বাস টার্মিনাল চালু হচ্ছে। এটি বন্দরনগরীর তৃতীয় বাস টার্মিনাল। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ভৌত কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে।তিন দশক পর নগরীতে অত্যাধুনিক এই সিটি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। নগরীর জালালাবাদ ওয়ার্ডের কুলগাঁও বালুচরা এলাকায় ৮ দশমিক ১০ একর জায়গায় টার্মিনালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে টার্মিনালের ড্রেন নির্মাণ, বাউন্ডারি ওয়াল, ভবন নির্মাণ ও ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করে ফেব্রুয়ারিতে সিটি বাস টার্মিনাল চালু হবে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
টার্মিনাল না থাকায় বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার উপর যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় কুলগাঁও এলাকায় বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে চসিক। টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ হলে যানজট অনেকাংশে কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম নগরীর প্রথম বাস টার্মিনাল নির্মিত হয় কদমতলীতে। দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মিত হয় বহদ্দারহাটে ১৯৯৩ সালে। এরপর দীর্ঘ ৩২ বছরেও নির্মাণ হয়নি কোনো বাস টার্মিনাল। সিটি বাস টার্মিনাল প্রকল্পটি ২০১৮ সালের অক্টোবরে অনুমোদন হয়। নানা জটিলতায় দীর্ঘ ছয় বছরের বেশি সময়েও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি চসিক।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) করা চট্টগ্রাম সিটি মাস্টার প্ল্যানে কুলগাঁও এলাকায় মোট ২৮ একর জমিতে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ রাখা হয়। তবে চসিক প্রাথমিকভাবে ৮ দশমিক ১০ একর জায়গায় উন্নয়ন করে টার্মিনাল নির্মাণ করছে। প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের জন্য ২৬০ কোটি টাকা, ভূমি উন্নয়নে ৩ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা, অবকাঠামো উন্নয়নে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এই টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার ও আন্তঃনগর উভয় ধরনের বাসই ছাড়বে। টার্মিনালটিতে মোট ১৬০টি বাস-ট্রার্ক পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
জানতে চাইলে চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) রিফাতুল করিম বলেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এরমধ্যে ইয়ার্ড, বাউন্ডারি ওয়াল এবং ড্রেনের কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া ভবনের কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করে ফেব্রæয়ারি থেকে টার্মিনালটি চালু হবে।তিনি আরো বলেন, ২০২৪ সালে সরকার পতনের পর থেকে ৫-৬ মাস প্রকল্পের কাজ বন্ধ ছিল। মেয়র মহোদয় দায়িত্ব নেয়ার পর পুনরায় কাজ শুরু হয়। ওই সময়ে কাজ বন্ধ না থাকলে চলতি বছরের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হতো।
যা থাকছে টার্মিনালে: টার্মিনালের প্রবেশ পথে একটি ৩ তলা সুদৃশ্য ভবন থাকবে। এছাড়া, একটি সিটি বাস টার্মিনাল, একটি আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল, ২৫টি যাত্রী বোর্ডিং লেন, ১৪টি অতিরিক্ত ওয়েটিং লেন, একটি বড় খোলা হল রুম এবং তথ্যকেন্দ্র, পুরুষ ও নারীদের জন্য টয়লেট, ২২টি টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বসার জায়গা, ওয়াইফাই সুবিধা, লাগেজ রুম, ট্যাক্সি বুকিং রুম, ফাস্ট এইড স্টেশন, রেস্তোরাঁ, এসি বাসের যাত্রীদের বসার জায়গা, বাস-ট্রাক মালিকদের জন্য অফিস এবং বাস কর্মচারীদের আবাসন কক্ষ থাকবে।

আরও পড়ুন