আন্তর্জাতিক ডেস্ক:আর্জেন্টিনার হাসপাতালগুলোতে দেওয়া দূষিত ফেন্টানিলের কারণে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে দেশটির সরকার। এ ঘটনায় দ্রুত সাড়া না দেওয়ায় জনগণের ক্ষোভ বাড়তে থাকলেও সরকার এ ঘটনার জন্য স্থানীয় এক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করেছে।গত মে মাস থেকে আর্জেন্টিনা চারটি প্রদেশ ও রাজধানী বুয়েনস আইরেসের হাসপাতালগুলোতে ব্যবহৃত ব্যাকটেরিয়া-সংক্রমিত এ ওষুধের কারণে কতজনের মৃত্যু ঘটেছে তা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছে।
আর্জেন্টিনার লিবার্টারিয়ান প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলির এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এইচএলবি ফার্মা গ্রুপের মালিক অ্যারিয়েল ফুরফারো গার্সিয়া দূষিত ফেন্টানিলের ওই ব্যাচের প্রস্তুতকারক, যা শতাধিক মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, তদন্ত শেষে আর্জেন্টিনার ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এএনএমএটি প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটার তিন মাস আগে ওই ল্যাবটি বন্ধ করে দিয়েছিল।সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফুরফারো গার্সিয়া আগেই তার দায় অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তার এক সাবেক সহকর্মীই গণমাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে দিয়েছেন।দুই সপ্তাহ আগে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটা বুয়েনস আইরেসের দক্ষিণে লা প্লাতা শহরের একটি হাসপাতালের বাইরে নিহতদের স্বজনেরা প্রতিবাদ করেন ও ‘ফেন্টানিল ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার’ দাবি জানান।সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ এল বুয়েনস আইরেস প্রদেশের ৭ সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির এ খবর এল ।এ ভোটকে আগামী অক্টোবরের জাতীয় মধ্যবর্তী আইনসভা নির্বাচনের পূর্বাভাস হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা মূলত স্বঘোষিত ‘অরাজক-পুঁজিবাদি’ মাইলির জনপ্রিয়তার পরীক্ষা।
লা প্লাতায় এক নির্বাচনী সমাবেশে মাইলি তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, বামপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা কির্শনারের সমর্থকদের অভিযুক্ত করেন, তারা ফুরফারো গার্সিয়ার সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিয়ে ‘জঘন্য ভাবে আড়াল’ করেছেন। তবে তিনি কোনো প্রমাণ দেননি।ফুরফারোকে ‘দীর্ঘদিনের কির্শনারপন্থী সহযোগী’ আখ্যা দিয়ে মাইলি অভিযোগ করেন,‘তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা যেকোনো নৃশংসতা করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন।’
এএনএমএটির পক্ষ থেকে করা অভিযোগের ভিত্তিতে ফেন্টানিল মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়। সংস্থার এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে জানান, একটি হাসপাতাল তাদের সরবরাহে দূষিত ওষুধ শনাক্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, নতুন চিকিৎসা রেকর্ড পর্যালোচনা ও আগে রিপোর্ট না হওয়া হাসপাতালগুলো থেকে তথ্য আসার পর মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।সূত্র : এএফপি
