নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলটির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার আহত হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি ছাড়াও তার পক্ষের আরো অনেকে আহত হয়েছেন।মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে রাউজান পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সত্তরঘাট এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।খোন্দকারের অনুসারীরা জানিয়েছেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষের লোকজনই তাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সংসদ সদস্য এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার রাউজান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদের কবর জিয়ারতে যাচ্ছিলেন। এসময় বিপরীত দিক থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা ৯ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি এবং গণ সমাবেশ উপলক্ষে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে সত্তরঘাট এলাকায় পৌঁছায়।
মুখোমুখি অবস্থান থেকে মুহূর্তেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গোলাম আকবর খোন্দকারের গাড়িবহরে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং তার গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এসময় গোলাম আকবর খোন্দকার ছাড়াও তার সঙ্গে থাকা বহু নেতা-কর্মী আহত হন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বলেন, ‘আমরা গত ১৭ বছর এলাকায় থাকতে পারিনি। জেল জুলুমে অতিষ্ট ছিলাম। আজকে আমরা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও রাউজান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কবরস্থানে যাচ্ছিলাম। ঠিক তখনই আমাদের ওপর হামলা হয়। আমাদের কবর জিয়ারত করতে যেতে দেয়া হয়নি।’তিনি আরও জানান, গোলাম আকবর খোন্দকারসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি ও যুবদলের নেতারা গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের বহরে থাকা মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গোলাম আকবর খোন্দকারের ব্যক্তিগত সহকারী অর্জুন কুমার নাথ জানিয়েছেন, গোলাম আকবর খোন্দকারকে লক্ষ্য করেই গুলি করা হয়েছিল। গলার পাশ দিয়ে গুলি চলে গেছে, এখনও রক্তপাত হচ্ছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, ঘটনার পরপরই গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীরা ঘটনাস্থলে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। বর্তমানে রাউজানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির তৎপরতা আছে।
যা বললেন খোন্দকার—
হামলার পর গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘আমি আগেই সংবাদ পেয়েছিলাম তারা হামলা করবে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করিনি। পরে একটি নোট পেলাম, গিয়াস উদ্দিনের নির্দেশে আজকে সারাদিন সত্তরঘাট থেকে মুন্সিঘাটা পর্যন্ত মিছিল করা হবে। চিন্তা করলাম এটা একটা অশুভ পরিকল্পনা।’আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আগেই জানানো হয়েছিল জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনিকে জানালাম, তারা আমাকে কনফার্ম করলো কোনো অসুবিধা নেই, আমরা আছি। তারপর আমরা আসছি। কিন্তু আমরা যখন সত্তরঘাট ব্রিজ ক্রস করলাম তখন ৫০-৬০ জন লোক ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করল। লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করল।’
তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
