ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে যুবদল নেতার হাতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২০ জুন) বিকেলে, উপজেলার সুয়াবিল ইউনিয়ন বিএনপির সভায়। তবে ঘটনার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও, উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা বিষয়টিকে ‘সামান্য ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, বড় রাজনৈতিক দলে নানা প্রতিযোগিতা থাকেই, আর কখনো কখনো এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত সুয়াবিল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. এয়াকুব শহীদ ও যুবদলের আহ্বায়ক নঈম উদ্দিনের মধ্যে। দলীয় একটি বিষয় নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত আলোচনা সভায় তারা অংশ নেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার, সদস্য সচিব মো. জহির আজম চৌধুরীসহ অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আলোচনা চলাকালে হঠাৎ করে সুয়াবিল ইউনিয়নের কিছু নেতাকর্মী এসে হট্টগোল শুরু করেন এবং এয়াকুব শহীদকে গালাগাল করতে থাকেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় এয়াকুব শহীদকে বেদম মারধর ও অপমান করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। পরে সিনিয়র নেতারা তাকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে এয়াকুব শহীদ বলেন, ‘দলীয় কিছু নেতাকর্মী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অবৈধভাবে বালু ও মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত। আমি তা বন্ধ করার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি উপজেলা নেতৃবৃন্দকে জানালে তর্ক-বিতর্ক এবং একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সিনিয়র নেতারা বিষয়টি মীমাংসা করেন।’
অন্যদিকে সুয়াবিল ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক নঈম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেই। একটি পুরনো মামলাকে কেন্দ্র করে দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম ব্যবহার করে ব্যবসা করার চেষ্টা করছেন এয়াকুব শহীদ। আমি এর বিরোধিতা করলে তিনি নেতৃবৃন্দকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। ঘটনার সময় কে কোথায় কীভাবে আহত হয়েছেন, সে বিষয়ে আমি অবগত নই।’
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার জানান, ‘এটি ছিল একটি সামান্য ভুল বোঝাবুঝি। বড় দলে এমন প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে।’
তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই জানান, সুয়াবিল এলাকায় বিএনপির ভেতরে দুটি স্পষ্ট গ্রুপ বিদ্যমান। আধিপত্য, অর্থনৈতিক স্বার্থ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই উত্তেজনা দেখা দেয়। এ বিষয়ে ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আহমেদ বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
