৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গ্রীস্মের উষ্ণতায় সুরের প্রশান্তি ; অন্তরার ৪১ তম বর্ষপূর্তি উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তরা ছোট্ট একটি নাম কিন্তু এর এ বিস্তৃতি এখন অনেক দূর এগিয়ে। বাংলাদেশ তথা এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম হাওয়াইয়ান গিটার ভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন “অন্তরা হাওয়াইয়ান গিটার শিল্পীগোষ্ঠী” চট্টগ্রাম যার জন্ম লগ্ন। ১৮ ডিসেম্বর ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দ থেকেই শুদ্ধ সংস্কৃতির ধারায় গিটার চর্চায় নিবেদিত রয়েছে। সময়ের সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় নানা প্রতিকূলতার মাঝে অনেক শুভানুধ্যায়ী, গুণীজন, সঙ্গীতজ্ঞ ও সংগীত পিপাসু দর্শক-শ্রোতার অকুণ্ঠ ভালবাসায় সিক্ত হয়ে চট্টগ্রাম তথা সারা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ইতোমধ্যে এক বিশেষ অবস্থান তৈরি করেছে।গত ১৬ মে থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম এ সংগঠনের ৪১ তম বর্ষপূতি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত হয় গিটার বাদন অনুষ্ঠান”সুরের ভুবনে “।

সন্ধ্যা সাতটা পাঁচ মিনিটে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাল জয়ী গান “তোমার মুক্তি আলোয় আলোয়” সুরে অন্তরার শিল্পীদের হাওয়াইয়ান গিটারে বৃন্দ বাদন ও নৃত্য শিল্পীদের অপূর্ব কোরিওগ্রাফিতে হলের পর্দা উন্মোচিত হয়। সংগঠনের কার্যক্রম, দর্শক শ্রোতাদের সহযোগিতার জন্য অভিবাদন জানিয়ে এবং সংগীতা অনুষ্ঠানের রিহার্সেল থেকে শুরু করে সব কাজ সুচারুভাবে পালন করায় মহড়া উপপরিষদ প্রধান অরূপ তালুকদার কে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জনাব আশীষ কুমার বৈদ্য। এরপর শিল্পী সজীব পাল মোহন বীণায় তার সুন্দর বাদন শৈলীতে রাগ “মালকোষ” পরিবেশন করে শ্রোতাদের মন জয় করে নেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এবারের অনুষ্ঠানে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধিত হন প্রবীণ গিটার শিল্পী, প্রশিক্ষক ও স্বরলিপিকার শ্রী বাবুল কান্তি দে। তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা সহ উত্তরীয় পরিয়ে দেন সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত দেবু।এতে প্রধান বক্তা ছিলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর রিতা দত্ত তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা সহ উত্তরীয় পরিয়ে দেন সদস্য এডভোকেট প্রবির রক্ষিত। সংবর্ধিত গুণীজণের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।যাদের চিন্তা-চেতনায় উদ্ভাবিত হয়ে এই “অন্তরা” প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেইসব প্রতিষ্ঠাতা সদস্যগণকে ঘোষক মঞ্চে আসার আহ্বান জানান সর্ব জনাব সুজিত নন্দী,শানুদাস গুপ্ত, প্রদীপ দাস পরাগ কে। অনুষ্ঠানে সানু দাশগুপ্ত অনুপস্থিত থাকায় জনাব সুজিত নন্দী ও প্রদীপ দাস পরাগকে ফুলেল শুভেচ্ছা উত্তরীয় প্রদান করেন যথাক্রমে সংগঠনের সদস্যা সাথী তালুকদার ও প্রতিমা দাস।

অতঃপর সংগঠন প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে আত্মনিবেদিত সক্রিয় সদস্য সদস্যাদের মধ্যে সর্ব জনাব এনামুল হক মজুমদার, দুলাল কান্তি দে ও ডা. নাজনীন আক্তার সেতু কে যথাক্রমে ফুলেল শুভেচ্ছা সহ উত্তরীয় পরিয়ে দেন সংগঠনের সদস্য সদস্যা মনজুরুল হক মঞ্জু, সজীব পাল ও ঐন্দ্রিলা ঘোষ। এদের সবার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন সংগঠনের সভাপতি ডা.বাবুল কান্তি সেনগুপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার বৈদ্য। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা প্রফেসর গীতা দত্ত শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সংবর্ধিত অতিথি শ্রী বাবুল কান্তি দে তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে অন্তরার আরও শ্রীবৃদ্ধি কামনা করেন এবং গিটার চর্চায় প্রচুর অনুশীলনের প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। এরপর সংগঠনের সম্মানিত উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অধ্যক্ষ প্রফেসর সুবীর দাস, কণ্ঠশিল্পী ও সংস্কৃতি সেবক জনাব রিয়াজ ওয়ায়েজ, লায়ন রাজিব সিংহ ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয় প্রাইভেট লিমিটেড, ডক্টর রুবেল সেনগুপ্ত ডীন ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম কে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপনসহ উত্তরীয় পরিয়ে দেন যথাক্রমে বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে মহড়া উপ পরিষদ প্রধান অরূপ তালুকদার, সদস্য পার্থপ্রতিম দাশগুপ্ত, লগ্নজিত সেন ও রঞ্জিত কর্মকার। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাংস্কৃতিক কর্মকর্তাকে মঞ্চে আহবান করে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উত্তরীয় জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। বর্ষ পূর্তি উদযাপনে নিরলস কর্মতৎপরতার জন্য অনুষ্ঠান আহ্বায়ক ইলিয়াছ ইলুকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উত্তরীয় প্রদান করেন সদস্যা কণিকা বৈষ্ণব এবং তাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। অতঃপর ৪১তম বর্ষপূর্তি উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে হাওয়াইয়ান গিটারের প্রচার প্রসারে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় সংগঠনের সভাপতি ডাক্তার বাবুল কান্তি সেনগুপ্তর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অনুষ্ঠান আহ্বায়ক ইলিয়াছ ইলু এবং তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন আশীষ কুমার বৈদ্য। অতঃপর অন্তরার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন কণ্ঠশিল্পী ও সংস্কৃতি সেবক রিয়াজ ওয়ায়েজ, প্রবীণ গিটার প্রশিক্ষক শ্যামল মিত্র, জাসাস চট্টগ্রামের আহ্বায়ক লায়ন এম এ মুসা বাবলু ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা প্রমূখ। অতঃপর চট্টগ্রামের বাইরের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রেরিত প্রশংসা ও শুভেচ্ছা সম্বলিত অডিও ভিডিও ক্লিপ এর মাধ্যমে স্কিনে প্রদর্শিত হয় প্রবীণ গিটারশিল্পী ও স্বরলিপিকার জনাব এনামুল কবির এর বক্তব্য, বাংলাদেশ গিটার শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জনাব খালিদ খলিল শিমুল, নাহার আহমেদ, বাংলাদেশ হাওয়াইয়ান গিটার শিল্পীগোষ্ঠী রংপুর এর সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব আলম খান ও সাধারণ সম্পাদক মেহবুবা ফেরদৌস এবং নারায়ণগঞ্জ হাওয়াইন গিটার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা অংকন রানা সহ সবার শুভেচ্ছা বাণী। অতঃপর অন্তরা হাওয়াইয়ান গিটার শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সদস্যাদের মঞ্চে উপস্থিতিতে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন জোসেফ হাওয়া ইয়ান গিটার পরিষদ, ক্লাসিকাল তবলা স্টুডেন্ট ফোরাম, চাটগাইয়া নওজোয়ান, স্বরলিপি সাংস্কৃতিক অঙ্গন, জাসাস চট্টগ্রাম মহানগর এর সদস্যরা। সবশেষে সাউন্ড টাচ চট্টগ্রামের সদস্যগণ ফুলেল শুভেচ্ছা ও শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন অন্তরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতে।


এবারে শুরু হল মূল গিটার বাদন অনুষ্ঠান : প্রথমে “তুমি সন্ধ্যা আকাশে তারার মত” সাইফুল ইসলামের গাওয়া জনপ্রিয় আধুনিক গানটি গিটারে বাজিয়ে শোনান শিল্পী প্রবীর রক্ষিত। শিল্পী বেশ সুন্দরভাবে গানটি পরিবেশন করেন। ‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো “তালাত মাহমুদের বিখ্যাত সেই আধুনিক গানটি পরিবেশন করেন শিল্পী আশীষ কুমার বৈদ্য। মনমুগ্ধকর গানটি তিনি বেশ সুন্দরভাবে বাজালেন। এরপর নজরুলের বিরহের গান “নয়ন ভরা জল গো তোমার আঁচল ভরা ফুল ” গানটি গিটারে সুর তুললেন শিল্পী বিশুতোষ তালুকদার ।”সুরের ভুবনে আমি আজও পথচারী” মাহমুদ্দুন নবীর মেলোডিয়াস আধুনিক গানটি গিটার বাজালেন শিল্পী ইলিয়াছ ইলু । অনুষ্ঠানের শিরোনাম যথার্থ ভাবে শিল্পীর হাতে ফুটে উঠেছে ।পরবর্ত্তী গান নজরুল ইসলামের “এসো হে সজল শ্যাম ঘন দেয়া” রাগ প্রধান গানটি গিটারে বাজালেন শিল্পী মদন মোহন ঘোষ,সাথে নৃত্যে ছিলেন চয়ন, নন্দিতা,অবনিকা। নৃত্যের সাথে গানটি বেশ উপভোগ্য হয়েছে ।এরপর বর্ষীয়ান গিটার শিল্পী ডা: বাবুল কান্তি সেনগুপ্ত বাজালেন আব্বাসউদ্দীনের লোকসংগীত “প্রাণ সখীরে ঐ শোন কদম্ব তলে বংশী বাজায় কে” এই বয়সেও যে শিল্পী গিটার বাজালেন সেটা বেশ একটা অনুপ্রেরণা হতে পারে অন্যান্য শিল্পীদের ।” ঐ ঝিনুক ফোঁটা সাগর বেলা ” সামিনা চৌধুরীর জনপ্রিয় আধুনিক গানটি বেশ সুন্দর ভাবে গিটারে সুর তুললেন শিল্পী কণিকা বৈষ্ণব ।সৈয়দ আবদুল হাদীর গাওয়া মেলোডিয়াস আধুনিক গান “কেন তারে ভালোবাসলাম ” আধুনিক গানটি বাজালেন শিল্পী পার্থ প্রতিম দাশগুপ্ত ।শিল্পী খুব ভালো ভাবে গানটি পরিবেশন করলেন।পরবর্তী আধুনিক গান আঞ্জুমান আরা বেগমের “আকাশের হাতে আছে এক রাশ নীল” পরিবেশন করলেন শিল্পী প্রতিমা দাশ ।শিল্পীর তাল জ্ঞান অপরিপক্ক বলে মনে হয়েছে ,শিল্পীর তাল মাত্রায় আরো যত্নবান হওয়া উচিত মনে হয়েছে ।দেশের গান “জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো” সাবিনা ইয়াসমিনের জননন্দিত গানটি অপূর্ব হাতে বাজালেন শিল্পী অরূপ তালুকদার । শিল্পীর হাতের কারুকাজে গানটি দর্শকবৃন্দ বেশ উপভোগ করলেন। সাথে দৃষ্টি নন্দন নৃত্যে অবনিকা, কাশপি,প্রাচী ও ঐশি বেশ ফুটিয়ে তুলেছেন।
“চোখের আলোয় দেখেছিলাম চোখের বাহিরে” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে গিটারে বাজালেন পরবর্তী শিল্পী সাথী তালুকদার,শিল্পী বেশ সুন্দর ভাবে গানটি বাজালেন ।বেশ জনপ্রিয় আধুনিক গান ” তুমি আমার এমনই একজন “কনক চাঁপার সুরেলা কন্ঠের গানটি পরিবেশন করলেন শিল্পী প্রদীপ দাশ পরাগ । শিল্পী যথাযত ভাবে গানটি পরিবেশন করলেন।পরবর্তী আধুনিক গান ” সন্ধ্যার ছায়া নামে এলোমেলো হাওয়া” সাবিনা ইয়াসমিনের খুব পরিচিত গানটি পরিবেশন করলেন শিল্পী শুক্লা আচার্য্য । শিল্পীর বাদন দর্শকরা বেশ উপভোগ করলেন । এরপর লাকী আকন্দের বিখ্যাত গান ” আমায় ডেকো না ফেরানো যাবে না” গানটি বেশ চমকপ্রদ ভাবে বাজালেন শিল্পী দেবাশীষ দত্ত দেবু । এই গানের সাথে আধুনিক ধাচে নৃত্যে অংশ গ্রহন করলেন চয়ন ও নন্দিতা। জমজমাট গানটি এতোক্ষণ মেলোডিয়াস গানের মাঝে বেশ অন্য মাত্রা সৃষ্টি করলো । “আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয় ” সুবীর নন্দীর বেশ জনপ্রিয় আধুনিক গানটি গিটারে সুচারুভাবে ফুটিয়ে তোলেন ডা: মৌমিতা ঘোষ । সাবিনা ইয়াসমিনের “আমি আছি থাকবো ভালোবেশে মরবো “ছায়াছবির গানটি বাজান শিল্পী তারমিলা উর রহমান। শিল্পী বেশ সুন্দর ও দক্ষতার সাথে গানটি পরিবেশন করেন।” চুপিচুপি বলো কেউ জেনে যাবে” খুরশীদ আলমের বিখ্যাত সেই গানটি জমজমাট ভাবে বাজালেন শিল্পী মঞ্জুরুল হক মঞ্জু । সর্বশেষে লোক সংগীত “এমন যদি হতো, বকুল ফুল বকুল ফুল ও পিন্দারে পলাশের বন -এই ৩টি গানের একটি ফিউশান বাজিয়ে শোনান শিল্পী অরূপ তালুকদার ও প্রদীপ দাশ পরাগ এবং এই ৩টি গানের সাথে নৃত্যে অংশ গ্রহন করেন অর্পণা,অদ্রি,কাশপি,প্রাচী, চয়ন,নন্দিতা ও অবনিকা । গানটি দর্শকরা বেশ ভালোভাবে উপভোগ করেন ।এই পুরো অনুষ্ঠানের সংগীত পরিচালনায় ছিলেন অরূপ তালুকদার । যন্রসংগীতে ছিলেন কী-বোর্ডে সৃজন রায়,তবলায় পলাশ দেব,হ্যান্ডসনিকে অনিক সেনগুপ্ত, স্প্যানিশ গিটারে শাহনেওয়াজ, বেইজ গীটার এস.আই জুয়েল,এজ্ররাসে মদন মোহন ঘোষ,পারকিউশানে রঞ্জিত কর্মকার,অনুষ্টান সঞ্চালনায় ছিলেন প্রবীর পাল ও প্রতিমা দাশ,প্রজেক্টর স্লাইডে বিশুতোষ তালুকদার,শব্দ নিয়ন্ত্রণে ইলিয়াস ইলু ও মোরশেদ । নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন হিল্লোল দাস সুমন পরিশেষে এই গ্রীষ্মের ভর সন্ধ্যায় শুরু হওয়া গিটার বাদন সন্ধ্যাটি দর্শকদের মনে অনেকদিন রেখা পাত করবে বলে আশা রাখি।

আরও পড়ুন