নিউজ ডেস্ক: মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল রাতেই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। এবার এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে হত্যার বিচার চাইলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, এই হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সাম্যর খুনিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি করছি।এ হত্যাকাণ্ড শুধু একটি পরিবারের সন্তান হারানোর বেদনা নয়, এটা গোটা শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা ও নৈতিকতার ওপর সরাসরি আঘাত।
ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বহুদিন ধরে মাদক, চাঁদাবাজি ও অপরাধচক্রের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে, এখন আর চোখ বুজে থাকার সময় নেই। এই উদ্যানের নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আর কোনো সাম্যকে হারাতে চাই না।এদিকে সারজিস আলমও নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে সাম্য হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির নিশ্চিতের দাবি জানান।
সারজিস আলম লেখেন, ‘সময়ের সাথে সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে উঠেছে চাঁদাবাজি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্মের আখড়া। অথচ এই উদ্যান সংলগ্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট এবং অফিস থাকা সত্ত্বেও তারা এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশন না নিয়ে এসবের ভাগিদার হয়েছে।যার ফলশ্রুতিতে আমরা আমাদের অনেক ভাই বোনকে বিপথে যেতে দেখেছি, একাধিক প্রাণনাশের ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি আরো লেখেন, ‘গতকাল সাম্যের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখেছি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দ্রুত কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক আর বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে নিয়মিত সাঁড়াশি অভিযান চালানো হোক, উদ্যান এলাকা সম্পূর্ণ নজরদারিতে আনা হোক, অপ্রয়োজনীয় ইট পাথরের অবকাঠামোগুলোকে ভেঙে প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।
উল্লেখ্য, নিহত সাম্য ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।তিনি সিরাগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বাসিন্দা ফখরুল আলমের ছেলে।
জানা গেছে, রাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে ঢাবি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মুক্তমঞ্চের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় অন্য একটি বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং ধস্তাধস্তি হয়।
এক পর্যায়ে সাম্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান রানে আঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তার সহপাঠীরা রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্যকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
