রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী সরকারি কলেজের ছাত্রীনিবাস উদ্বোধনের ৫ বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত চালু হয়নি। এতে পাহাড়ের দুর্গম এলাকা থেকে আসা ছাত্রীদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দিনের পর দিন ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে ছাত্রীনিবাসটি চালু করা হয়নি।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে এক তলা ভবনের ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা ছাত্রীনিবাসটির উদ্বোধনও করেন। এখানে ১২ জন ছাত্রী থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ভবনটিতে পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উদ্বোধনের পর থেকেই ছাত্রীদের নামে এটি বরাদ্দ দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফলে অব্যবহৃতই রয়ে গেছে ভবনটি। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের মূল ফটকে ঝুলছে তালা। দীর্ঘদিন না খোলায় ভবনের জানালা দরজা ও তালায় মরিচা পড়েছে। অযত্ন অবহেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে ভবনটি। চারদিকে অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পরিবেশ। দিনের পর দিন এভাবে পড়ে থাকলে ব্যবহারের আগেই পুরোপুরি অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রী জানান, কলেজে অধিকাংশই গরিব পরিবারের সন্তানরা লেখাপড়া করে। বিশেষ করে কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করেন এখানে। তাদের নিয়মিত যাতায়াত করা সম্ভব হয় না। তাই অনেকে কলেজ এলাকার আশপাশে বাসা ভাড়া অথবা মেসে থাকছে। এতে অনেক টাকা ব্যয় হয়ে যাচ্ছে তাদের। অনেক অসচ্ছল পরিবারের ছাত্রীরা এ ব্যয় বহন করতে অক্ষম। ছাত্রীনিবাসটি খুলে দিলে অনেকের সমস্যার সমাধান হতো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ এএইচএম বেলাল চৌধুরী বলেন, সীমানাপ্রাচীর না থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে ছাত্রীনিবাসটি চালু করা হয়নি। ছাত্রীনিবাসটির সীমানাপ্রাচীর, নিরাপত্তা প্রহরী ও হোস্টেল সুপার নিয়োগের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। এসব সমস্যার সমাধান হলে ছাত্রীনিবাসটি চালু করা হবে।
প্রসঙ্গত, কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে প্রায় ২ হাজার ১৬৬ শিক্ষার্থী রয়েছে। কাপ্তাই উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার অনেক শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করে থাকে।
