৪ঠা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপিতে কোন্দল : ১২ মাসে রাউজানে ১৫টি হত্যাকান্ড, ১০টি রাজনৈতিক

নিজস্ব প্রতিনিধি: কোন্দলের কারণে চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির মধ্যে শুধু রেষারেষি নয়, প্রতিনিয়ত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে দলটির বিবদমান দুই গ্রুপ। এ কারণে গত ১২ মাসে রাউজানে শুধু রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ১০টি। একই সময়ে রাউজানে ১৫টি খুনের ঘটনা ঘটলেও বাকিগুলো হয়েছে ব্যবসায়িক, আধিপত্য বিস্তার ও অন্যান্য কারণে। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকারসহ উভয় পক্ষের ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সকল পর্যায়ের পদ স্থগিত করে কেন্দ্র। একইসাথে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। এ ঘটনার পর বিএনপির বিবদমান দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে।
জানতে চাইলে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, সংগঠনের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে এটা স্বাভাবিক। তবে তা সাংঠনিক নিয়মের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে দোষীদের বিরুদ্ধে বিএনপি কঠোরভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। যারা কোন্দল করে দলের ক্ষতি করবে তাদের ব্যাপারে কেন্দ্রের জিরো টলারেন্স রয়েছে।
জানা গেছে, ৭ উপজেলা নিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উপজেলাগুলো হচ্ছে- মিরসরাই, সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উত্তর জেলার সবগুলো উপজেলায় নেতৃত্বের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়। তবে অন্য ৫টি উপজেলাকে ছাপিয়ে বিএনপির গৃহবিবাদ বেশি প্রকাশ্যে এসেছে রাউজান ও মিরসরাইতে। এ দুই উপজেলায় কোন্দল এতই তীব্র হয়েছে যে, নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বহিষ্কার, শোকজ ও পদ স্থগিতের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েও থামানো যাচ্ছে না। বরঞ্চ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সমূহের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরো তীব্র হচ্ছে।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মূলত আগামী সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন ঘিরে নিজেদের মধ্যে শক্তি প্রদর্শন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজি-এ চার কারণে বিএনপির মধ্যে কোন্দল চলে আসছে।
রাউজানের স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাউজানে মূলত দখলদারি ও নির্বাচনী মনোনয়ন ঘিরে রাউজানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি, পাল্টাপাল্টি খুনের ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই রাউজানের সত্তারঘাট এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপির শক্ত দুই পক্ষ এখন মুখোমুখি অবস্থানে আছে।এদিকে কোন্দল শুধু রাউজান ও মিরসরাই উপজেলা নয়, রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ি বিএনপিতে গ্রুপিং চলে আসছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ কোন্দল প্রকাশ্যে আসার শঙ্কা করছেন অনেকে।

আরও পড়ুন