১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হাদির মৃত্যুতে খাসমহল গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া

অনলাইন ডেস্ক: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল গ্রাম যেন হঠাৎ করেই নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত থেকে গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। পথে পথে ভিড়, কান্না আর চাপা ক্ষোভে ভারি হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাদির গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজন ও প্রতিবেশীদের শোকার্ত ভিড়।কেউ চোখের জল মুছছেন, কেউবা বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছেন। সবার কণ্ঠে একই দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হাদির রাজনৈতিক পরিচিতি গড়ে ওঠে। সদ্য অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন।এই রাজনৈতিক তৎপরতার মধ্যেই শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে গিয়ে হামলার শিকার হন তিনি। পরে ওই রাতেই তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।
হাদির ওপর হামলার পর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য ঢাকায় চলে যাওয়ায় গ্রামের বাড়িতে চুরির ঘটনাও ঘটে বলে স্বজনদের অভিযোগ। বর্তমানে বাড়িতে তার এক বোন অবস্থান করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। তবে শোকের কারণে পরিবারের কেউই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি।খাসমহল এলাকার এক নারী বাসিন্দা বলেন, ‘হাদির মৃত্যুর খবরে পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ। এমন প্রতিবাদী কণ্ঠ নলছিটির গর্ব ছিল। এই হত্যার বিচার না হলে ভবিষ্যতে আর কোনো হাদী জন্ম নেবে না। জুলাই অভ্যুত্থানের মতো সবাইকে আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’প্রতিবেশী রুবেল আহমেদ বলেন, ‘দ্বীনের কথা বলতে গিয়েই হাদী দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে। তার পরিবার অত্যন্ত ভালো মানুষ। এই বাংলার মাটিতে খুনিদের বিচার হতেই হবে, এটাই আমাদের দাবি।’
খাসমহলের বাসিন্দা নূরজাহান বলেন, ‘হাদী আমাদের এলাকার সন্তান। সে যেমন ভালো মানুষ ছিল, তার বাবাও তেমনই ছিলেন। সত্য কথা বলার কারণেই আজ সে নেই। আমরা চাই, এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।’

আরও পড়ুন