২২শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সীতাকুন্ডে সাংবাদিকের উপর হামলার ২৪ ঘন্টা পর মুঠোফোন উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক: : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মব সৃষ্টি করে সাংবাদিকের উপর হামলা ও ছিনতাই এর ঘটনার ২৪ ঘন্টা পর মুঠোফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে উদ্ধার করা মুঠোফোনটি আহত সাংবাদিক লিটন কুমার চৌধুরীর পরিবারের হাতে তুলে দেন পুলিশ।
পুলিশ জানায়,সাংবাদিককে মারধরের পাশাপাশি তার মুঠোফোন ও নগদ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পেয়ে তারা হামলাকারীকে কঠোর চাপ প্রয়োগ করেন। সোমবার রাতে হামলাকারীরা সাংবাদিক এর কাছ থেকে ছিনতাই করে নেওয়া মুঠোফোনটি কৌশলে ফিরিয়ে দিয়ে যান।
আহত সাংবাদিক লিটন কুমার চৌধুরীর ভাতিজা সুদীপ্ত চৌধুরী জানান,রাতে থানা থেকে মুঠোফোন আনতে ওসি ফোন করেন। পরে তিনি গিয়ে ওসির কাছ থেকে উদ্ধার করা মুঠোফোনটি নিয়ে আসেন।
সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাইয়ুম চৌধুরী জানান,মব সৃষ্টি করে পেশাদার সাংবাদিকদের উপর হামলার পাশাপাশি নগদ টাকা, ুঠোফোন,মানিব্যাগ ও ঘড়ি ছিনতাইয়ের ২৪ ঘন্টা পর পুলিশ তার ছিনতাই হওয়া মুঠোফোনটি উদ্ধার করেছেন। উদ্ধার করা মুঠোফোনটি সোমবার রাতে সাংবাদিকের স্বজনের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তবে এখনো তার ছিনতাই হওয়া নগদ ৭৫ হাজার টাকা,মানিব্যাগ ও ঘড়িটি উদ্ধার হয়নি। অবিলম্বে হামলাকারীদের কাছ থেকে এগুলো উদ্ধারে পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন,হামলা পরবর্তীতে ছিনতাই হওয়া মুঠোফোনটি সোমবার রাতে উদ্ধার করে আহত সাংবাদিক লিটন কুমার চৌধুরীর ভাতিজার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ছিনতাই হওয়া নগদ টাকা সহ অন্যান্য জিনিসগুলো উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে মব সৃষ্টি করে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক লিটন কুমার চৌধুরীর উপর ন্যাক্কারজনক হামলা ও জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মো.খাইরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাইয়ুম চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন,যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম,সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফারুক,প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সঞ্জয় চৌধুরী,দপ্তর ও পাঠাগার সম্পাদক আবুল খায়ের,প্রেস ক্লাবের সদস্য মির দিদারুল হোসেন টুটুল,কামরুল ইসলাম দুলু ও এস এম ইকবাল সহ প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন,সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে সাংবাদিক লিটনকে প্রকাশ্য মারধরের পাশাপাশি তার মুঠোফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়,পরবর্তীতে হামলার দায়ী স্বীকার করে হামলাকারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলার ভিডিও প্রচার করেন। বক্তারা চিহ্নিত এসব সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানান তারা।
প্রসঙ্গত,গত রোববার রাতে সীতাকুণ্ডের পৌরসদরস্থ রেল গেট এলাকার নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় সাংবাদিক লিটন কুমার চৌধুরীর উপর সন্ত্রাসী আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদ তার অনুসারীদের নিয়ে হামলা চালান। তারা এলোপাতাড়ি মারধরের পাশাপাশি মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেন। পরে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের অশালীন স্লোগান দিয়ে মারতে মারতে সীতাকুণ্ড থানায় নিয়ে যান। এ সময় সন্ত্রাসী আসাদ ও তার সহযোগীরা লিটনকে সীতাকুণ্ড থানায় নিয়ে পুলিশকে গ্রেপ্তার করতে বলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের জানিয়ে দেয়, তাঁর বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। পরে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকেরা পুলিশের সহায়তায় তাঁকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

আরও পড়ুন