১৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সারাদেশে ছুটি শে‌ষে খুলল স্কুল, স্বাস্থ্যবিধিতে অনীহা

অনলাইন ডেস্ক: ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মের ছুটির পর এমন একটি সময়ে স্কুল খুলল, যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।রোববার থেকে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার খুলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর গত ১৭ জুন থেকে মাদ্রাসাগুলোতে ক্লাস শুরু হয়েছে।করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে স্কুল-কলেজে মাস্ক ব্যবহার ও হাত ধোয়ার মত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ আসে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তরফ থেকে।রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভান্ন অঞ্চলের শিক্ষকরা বলছেন, রোববার প্রথম দিনের ক্লাসে মাস্ক ব্যবহার ও হাত ধোয়ার মত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অনীহা দেখা গেছে।মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলেছে অধিদপ্তর। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত এবং ভাইরাস ছড়ানো অন্যান্য দেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
সকালে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন, “বর্তমানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের যে হার, তাতে স্কুলের মাধ্যমে সংক্রামণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা নেই। আশপাশের দেশগুলোতে সংক্রামণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।”আর যদি সংক্রামণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায় সে হেঁটে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শক্রমে সরকারই স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আপাতত সে শঙ্কা নেই।”স্কুলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলা হচ্ছে কিনা কীনা সে তথ্য আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জানা যাবে বলেও মন্তব্য করেন এ কর্মকর্তা।সকালে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা শাহীনা কবির বলেন, “শিক্ষকরা মাস্ক পরে আসলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সে প্রবণতা খুবই কম। আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাস্ক দিচ্ছি। তারা ছাড়া তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলছি, ভবিষ্যতে তারা মাস্ক পরবেন বলে আশা করছি।”ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সিনিয়র শিক্ষক ফজিলাতুন নাহার শাম্মী বলেন, ক্লাসে ছাত্রীদের কেউ কেউ মাস্ক পরলেও অনেকেই পরেননি।
পাবনার সুজানগরের খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা মো. হাবিবুল্লাহ রাজু বলেন, “প্রথম দিনে মাস্ক পরার হার অনেকটা কম। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের আজ বলে দিচ্ছি, আশা করছি কাল থেলে তারা যথাযথভাবে মাস্ক ব্যবহার করবে।”
লম্বা ছুটিতে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
নওগাঁর পত্নিতলা উপজেলার সুবরাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক অহিদুল ইসলাম বলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকে স্কুলে একজন শিক্ষার্থীও মাস্ক পরে আসেনি।”দেশের সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হয় গত ১ জুন থেকে। এ ছুটি চলে একটানা ১৯ জুন পর্যন্ত।
সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোর ক্ষেত্রে ঈদুল আজহার ছুটি কিছুটা কম ছিল। ৩ জুন শুরু হয়ে চলে ১২ জুন পর্যন্ত। সে হিসাবে সাপ্তাহিক ছুটি বাদ দিলে এসব প্রতিষ্ঠানে ছুটি ছিল আট দিন।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি কিছুটা ভিন্ন। এসব বিদ্যালয়ে আগামী ৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ছুটি চলে ২৩ জুন পর্যন্ত।
৩ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত ১৪ দিন সরকারি-বেসরকারি ইবতেদায়ী, দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা বন্ধ থেকেছে। আর ৩ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ছুটি ছিল এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম ও বিএমটি পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।

আরও পড়ুন