আদালত প্রতিবেদক: নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) জুবিলী রোড শাখা থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুদক চট্টগ্রাম সমম্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শোয়াইব ইবনে আলম। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম সমম্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ।
এর আগে ৩০ জুলাই ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক চট্টগ্রাম পোর্ট শাখা থেকে ১৫ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল দুদক। ২৪ জুলাই সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপভুক্ত ভিশন ট্রেডিংয়ের নামে ভুয়া ঋণ অনুমোদন করিয়ে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক।গত ১৭ এপ্রিল ২০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করে দুদক।
সর্বশেষ দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সবুর, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শওকত জামিল, ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, সাবেক পরিচালক ইউনুছ আহমদ, হাজি আবু কালাম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, রোকসানা জামান চৌধুরী, বশির আহমেদ, সৈয়দ কামরুজ্জামান, মো. শাহ আলম, প্রফেসর ড. মো. জোনাইদ শফিক, ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক তৌহিদ সিপার রফিকজ্জামান, সাবেক এফএভিপি মো. মজিবুর রহমান, সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার (অপারেশন) মোহাম্মদ লোকমান আহম্মেদ, সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার সাইফুল ইসলাম, সাবেক এফএভিপি ও ক্রেডিট ইনচার্জ কান্তা দাশ গুপ্তা, সাবেক এসভিপি ও জুবিলী রোড শাখা প্রধান মোহাম্মদ আবদুল করিম, ক্রিসেন্ট ট্রেডার্সের মালিক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, প্রগ্রেসিভ ট্রেডিংয়ের মালিক মেহাম্মদ হোছাইন চৌধুরী, সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ইউনিট-২ ও রিভারসাইড এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুল খালেক ও ব্যাংকের গ্রাহক মো.ইয়াছিনুর রহমান।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) জুবিলী রোড শাখা থেকে ক্রিসেন্ট ট্রেডার্স নামীয় নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই একটি হিসাব খোলা হয়। পরে গ্রাহক সৈয়দ নুরুল ইসলাম ঋণের জন্য আবেদন করেন। শাখার কর্মকর্তারা মিথ্যা তথ্য সম্বলিত পরিদর্শন প্রতিবেদন তৈরি করেন। শাখার ক্রেডিট কমিটির সদস্যরা যাচাই ছাড়াই সেই ভুয়া প্রতিবেদনসহ ২৫ কোটি টাকা ঋণের সুপারিশ পাঠান প্রধান কার্যালয়ে।
ইউসিবির প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট কমিটি ঋণ প্রস্তাবে ১৭টি নেতিবাচক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন দেন। পরিচালনা পর্ষদের ৪৫৭তম সভায় ঋণটি অনুমোদন পায়। দুর্নীতিপূর্ণ কাগজপত্র ব্যবহার করে ক্রিসেন্ট ট্রেডার্স নামীয় প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ২৫ কোটি টাকা ঋণের অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে ওই অর্থ নগদে উত্তোলন, স্থানান্তর এবং মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
