বিনোদন প্রতিবেদক : বাংলাদেশের সংগীত জগতের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ৭১ বছর পূর্ণ করেছেন গত ৪ সেপ্টেম্বর। সদ্য ৭২-এ পা দেওয়া বাংলা গানের ‘কোকিলকণ্ঠী’ খ্যাত এই কণ্ঠশিল্পীর দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য সংগীতজীবন উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামীকাল রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে বরেণ্য এই শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।এ ছাড়া এদিন থাকছে শিল্পীর একক সংগীতানুষ্ঠান ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে কালজয়ী সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনকে সম্মাননা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করবেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এদিন সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব। ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ শিরোনামে হওয়া অনুষ্ঠানের এ পর্বে থাকবে সাবিনা ইয়াসমিনের জীবনভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী এবং তার সম্পর্কে দেশবরেণ্য শিল্পীদের স্মৃতিচারণা। নবীন জনপ্রিয় শিল্পী ও সংগীত পরিচালকদের কম্পোজিশনে থাকবে সাবিনা ইয়াসমিনের গান। তবে এ পর্বের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হিসেবে থাকছে সাবিনা ইয়াসমিনের একক সংগীতানুষ্ঠান।অনুষ্ঠানে তিনি পরিবেশন করবেন তার বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গানগুলো। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করবেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জগতের আরেক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট অভিনেতা আফজাল হোসেন। বাংলা গানের গৌরব কোকিলকণ্ঠী খ্যাত বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর এক সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সাবিনা ইয়াসমিনের সংগীতের হাতেখড়ি তার মায়ের কাছে। মাত্র ৬ বছর বয়সে তিনি ‘অল পাকিস্তান স্কুল মিউজিক কম্পিটিশনে’ গান গেয়ে প্রথম পুরস্কার জেতেন।এরপর একে একে বিভিন্ন ছায়াছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কণ্ঠ দেন।
সাবিনা ইয়াসমিন এ পর্যন্ত ষোলো হাজারের মতো গান রেকর্ড করেছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই চলচ্চিত্রের গান। এ ছাড়া তিনি কণ্ঠে তুলে নিয়েছেন আধুনিক বাংলা গান, পল্লীগীতি, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত ও গজলসহ বিভিন্ন ধরনের গান। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত এই শিল্পীর ভাণ্ডারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গানও রয়েছে। দীর্ঘ সংগীতজীবনে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেছেন তিনি।
১৯৮৩ সালে সাবিনা ইয়াসমিনকে ভারতের বিশ্ব উন্নয়ন সংসদ ‘সংসদ রত্ন’ উপাধিতে ভূষিত করে এবং ১৯৮৫ সালে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ লাভ করেন। এর আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদক’ লাভ করেন ১৯৮৪ সালে। সাবিনা ইয়াসমিনই বাংলাদেশের একমাত্র শিল্পী, যিনি শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী হিসেবে রেকর্ড ১৫বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।
