২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সরকারের হুঁশিয়ারির পর কাস্টমসের কার্যক্রম শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি গতকাল রবিবারেও পালন করা হয়। এতে চট্টগ্রাম বন্দরে চরম অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার গতকাল রবিবার পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে।
সরকারের পক্ষ থেকে একটি কড়া বিবৃতিও দেওয়া হয়। এতে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী’ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। অন্যথায় ‘সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে’ বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। এই হুঁশিয়ারি দেয়ায় গতকাল রবিবার সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে শুরু করে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কয়েকজন কর্মকর্তা কাজে যোগ দেন এবং সীমিত পরিসরে রপ্তানি পণ্য খালাস শুরু হয়।
আজ সোমবার সকাল থেকে পুরোদমে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কার্যক্রম শুরুর কথা জানিয়েছে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন। সংগঠনটির কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক এস এম রেজাউল করিম পূর্বকোণকে বলেন, সরকারি নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বেশিরভাগ চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্মকর্তা কর্মস্থলে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগামীকাল (আজ সোমবার) সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এদিকে গতকাল রবিবার (২৯ জুন) টানা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালনের ফলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে পণ্য খালাস ও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়ে। শুল্ক কর্মকর্তারা কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত থাকলেও কাস্টমস কম্পিউটার সিস্টেমে লগইন করেননি। ফলে বন্দর থেকে কোনো আমদানি পণ্য ছাড় হয়নি, রপ্তানিও কার্যত বন্ধ ছিল। বন্দরের গেটের সামনে সারি সারি পণ্যবাহী ট্রাক ও কনটেইনার আটকে থাকে। আমদানি ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষমাণ পণ্য খালাস না হওয়ায় খালাসকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাড়তি ডেমারেজ ও ডিটেনশন চার্জ গুণতে হচ্ছে।
চলমান আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী এনবিআর কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এনবিআরের ‘স্বায়ত্তশাসন’ নষ্ট করে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রেখে একতরফাভাবে একটি অর্ডার জারি করা হয়েছে। তারা দাবি করছেন, তাৎক্ষণিকভাবে এ অর্ডার প্রত্যাহার করতে হবে, নইলে আন্দোলন চলবে।
তবে সরকারের হুঁশিয়ারির পর আন্দোলন শিথিল হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। সূত্র জানিয়েছে, উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সংকটের সমাধান চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

আরও পড়ুন