অন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের সঙ্গে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে নতুন করে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের চালান পৌঁছেছে ইসরায়েলে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার আরও কয়েকটি কার্গো বিমান অস্ত্র ও সরঞ্জাম নিয়ে ইসরায়েলে অবতরণ করেছে।প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে ১৪টি কার্গো ফ্লাইট ইসরায়েলে পৌঁছেছে। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর মোট ৮০০টির মতো কার্গো উড়োজাহাজে সামরিক সরঞ্জাম এসেছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, এই সরবরাহের উদ্দেশ্য হলো চলমান যুদ্ধ পরিচালনায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের জন্য অস্ত্র মজুদ জোরদার করা। তবে সাম্প্রতিক চালানে কী ধরনের অস্ত্র রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি।
এদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত ‘অ্যারো’ সিস্টেমের গোলাবারুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। যদিও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এ তথ্য অস্বীকার করেছেন।গত ১৩ জুন ইসরায়েল নজিরবিহীন হামলা চালালে এর জবাবে ইরান একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ছুড়ে মারছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র মাঝ আকাশেই প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা
যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা জোরদারে ভূমিকা রেখে চলেছে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করছে। ওয়াশিংটন পোস্ট’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের হামলা চলতে থাকলে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ ছাড়া কিংবা মার্কিন সামরিক সহায়তা ছাড়া হয়তো ১০–১২ দিনের বেশি তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না।এক গোয়েন্দা বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিরক্ষা গোলাবারুদ সীমিত হওয়ায় ইসরায়েলকে বেছে নিতে হবে কোন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করবে। এরই মধ্যে ইরানের ধারাবাহিক হামলা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
ভূগর্ভস্থ ইরানি স্থাপনায় হামলার চ্যালেঞ্জ
আল-জাজিরা জানায়, ইসরায়েল এখনো ইরানের ফোর্দোর মতো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলোর বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারেনি। এসব স্থাপনা পাহাড়ের নিচে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মিটার গভীরে নির্মিত, যা সাধারণ বোমায় ভেদ করা কঠিন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক কেলসি ডেভেনপোর্ট জানান, এসব গভীর ভূগর্ভস্থ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ইসরায়েলের যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রয়োজন হবে। কারণ, এ ধরনের আক্রমণে সক্ষম ‘জিবিইউ–৫৭ বাংকার বাস্টার’ (ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর) কেবল যুক্তরাষ্ট্রেরই হাতে রয়েছে। এতে রয়েছে ১২ টনের বেশি বিস্ফোরক, যা গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় আঘাত হানতে সক্ষম।
