৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে ৩৮ হাজার গ্যালন জ্বালানি নিয়ে কার্গো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৭

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যে একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। যা লুইসভিল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই দুর্ঘটনার শিকার হয়। কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানান, লুইসভিলের এই বিমান দুর্ঘটনায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, বিমানটি উড্ডয়নের সময় প্রায় ৩৮ হাজার গ্যালন (প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার লিটার) জ্বালানি বহন করছিল, যার ওজন প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড (১ লাখ কিলোগ্রাম)। দুর্ঘটনার ফলে সৃষ্ট আগুন এখনো জ্বলছে, এবং দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি না যেতে সতর্কবার্তা দিয়েছে।কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার শুরুতে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন এবং ১১ জন আহত, যাদের মধ্যে কিছুজনের আঘাত গুরুতর। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’ পরে তিনি যোগ করেন, ‘বর্তমানে আমরা ক্রু সদস্যদের অবস্থা জানি না। ভিডিওটি দেখে আমরা সবাই তাদের নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন।’
পরে গভর্নর বেসিয়ার এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত সাতজন হওয়ার কথা জানান। তিনি লেখেন, ‘উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন এবং তদন্তের কাজ অব্যাহত রেখেছেন।’কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইউনাইটেড পার্সেল সার্ভিস (ইউপিএস) পরিচালিত এই বিমানে তিনজন ক্রু সদস্য ছিলেন। মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন প্রশাসন (এফএএ) জানিয়েছে, ম্যাকডোনেল ডগলাস এমডি-১১ মডেলের এই বিমানটি হনলুলুর উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, দুর্ঘটনাস্থলে কালো ধোঁয়া আকাশে উঠছে এবং ভয়াবহ আগুন জ্বলছে।স্থানীয় পুলিশ বিমানবন্দর থেকে ৮ কিলোমিটার (পাঁচ মাইল) এলাকার মধ্যে বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান করতে নির্দেশ দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বহু মানুষ আহত হয়েছে এবং দমকল ও উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।
লুইসভিলের মেয়র ক্রেইগ গ্রিনবার্গ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে দুর্ঘটনাটিকে ‘এক অবিশ্বাস্য ট্র্যাজেডি, যা আমরা কখনো ভুলব না’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমরা আমাদের সাহসী উদ্ধারকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ঘটনাস্থলে থাকা হতাহতদের সহায়তা করতে ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন।’
আগেই জানানো হয়েছে, ইউপিএস আগামী এক দশকের মধ্যে তাদের এমডি-১১ মডেলের বিমান বহর ধীরে ধীরে বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছিল। এমডি-১১ বিমানের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬১ মিটার এবং ডানার বিস্তার ৫২ মিটার। তবে এর তুলনায় বোয়িং ৭৪৭ মডেলটি আরও বড়—এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৬ মিটার এবং ডানার বিস্তার ৬৮ মিটার।বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল ৩৪ বছর পুরোনো। এটি প্রথমে ১৯৯১ সালে থাই এয়ারওয়েজের বহরে যুক্ত হয়েছিল, পরে ২০০৬ সালে ইউপিএসের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আরও পড়ুন