অনলাইন ডেস্ক: জামালপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে রিপন (৪০) নামে এক যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার পলাশতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত ওই এলাকার মৃত মোজাম্মেলের ছেলে। তিনি ট্রাক চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।মৃতের পরিবারের অভিযোগ, রিপনকে চোর সন্দেহে গাছের সঙ্গে বেঁধে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নির্যাতন চালানো হয়। মৃত্যুর আগে পানি পান করতে চাইলে পানি না দিয়ে তার বুকে লাথি দিয়ে আঘাত করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ শনিবার মধ্যরাতে নিহত রিপন তার প্রতিবেশী বোরহান নামে এক ব্যক্তির ঘরে ঢুকলে তাকে ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। পরে বোরহানের বাড়ির পাশের মেহগনি গাছের সঙ্গে তাকে বেঁধে মারধর করেন তারা।
মারধর চলে শেষ রাত পর্যন্ত। গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা অবস্থায় সকাল পর্যন্ত তিনি বেঁচে ছিলেন। সকালে পানি পান করতে চাইলে কেউ তাকে পানি দেয়নি। এর কিছু সময় পরেই তার মৃত্যু হয়।স্থানীয়দের অভিযোগ, মৃত এর আগে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চুরি করতেন এবং নানান অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
নিহতের ভাবি আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আজ শনিবার ভোরে জানতে পারি রিপনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। আমি গিয়ে দেখি, গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা। মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। এসময় পানি খেতে চাইলে পানি না দিয়ে একজন বুকে কয়েকটা লাথি দিয়ে বলেন- তোকে পানি দেব! এক সময় রিপন বলে- আমাকে আর মাইরেন না।এর কিছু সময় পরেই সে মারা যায়।’
রিপনের মা ফজিলা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি আর বাঁচতে পারতাছি না, আমি মরে যাব, আমারে আর কেরা আদর করবে? আমারে কে খাওয়াবে? আমার ছেলেরে যারা খুন করল তাদেরও যেন এভাবে মৃত্যু হয়। ছেলে আমার ডিস্ট্রিক্ট গাড়ি চালাইতো। আজ সকালে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই আমার ছেলেকে পিটিয়ে মারল।’এদিকে, এ ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত বোরহান ও তার ভাই দেলুসহ বাড়ি তালাবদ্ধ করে পলাতক রয়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আজ সকালবেলা আমার বাড়িতে বোরহান গিয়ে আমাকে বলেন- চোর ধরেছি, পরে আমি বলছি তোমরা যাও আমি আসতেছি। পরে আমি এসে দেখি মারা গেছে।’
মেলান্দহ থানার ওসি স্নেহশীয় রায় বলেন, ‘গণপিটুনিতে রিপনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
