মিরসরাই প্রতিনিধি: ন্যায্য মজুরিসহ ১৪ দফা দাবিতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মডার্ন সিনটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা৷ শনিবার (১০ মে) সকাল ৮ টা থেকে মডার্ন সিনটেক্স কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
শ্রমিকেরা জানান, বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি নিয়ে শনিবার সকাল থেকে তারা কর্মবিরতি দিয়ে কারখানার বাইরে অবস্থান করছেন। এ সময় কারখানার কর্মকর্তারা মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের প্রতিনিধি নিয়ে বিষয়গুলো সম্পর্কে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দেন।
কারখানার জুনিয়র অপারেটর তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘এখানে প্রতি পদে পদে বৈষম্যের সম্মুখীন হতে হয় শ্রমিকদের ৷ আমরা ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব৷’
কারখানা শ্রমিক মেহেদী হাসান, এসএম মিলন সানি, আরাফাত আহমেদ জানান, শনিবার সকাল ৮ টা থেকে কারাখানার কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলনে প্রায় ৪ শতাধিক শ্রমিক অংশ নিয়েছে। আমাদের ১৪টি দাবী রয়েছে সেগুলো পূরণে কর্তৃপক্ষ সাড়া না দিলে আন্দোলন চলমান থাকবে।
তবে মডার্ন সিনটেক্স লিমিটেডের এইচ আর ম্যানেজার ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘তাদের অন্যতম দাবি হচ্ছে বেতন নিয়ে৷ কিন্তু আমাদের যখন ইন্টারভিউ হয় তখন আমরা শ্রমিকদের বলে দিই তোমাদের ৮ ঘণ্টার স্যালারি কিন্তু ডিউটি হবে ১২ ঘণ্টা। টোটাল বেতন তখন বলে দেয়া হয়৷ এখানে ওভারটাইমসহ এড করা৷ শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের পারফরম্যান্স অনুযায়ী বেতন বাড়বে৷ পারফরম্যান্স ভালো হওয়ার ভিত্তিতে বেতন বাড়ে৷
কারখানাটির জিএম সফল বড়ুয়া জানান, আমাদের অফিসিয়ালি আগে এসব জানানো হয়নি। হঠাৎ আজ আন্দোলনে নেমেছে শ্রমিকরা। কিছুক্ষণ আগে তারা আমাদের আধা ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য। ম্যানেজমেন্টের একজন কর্মকর্তা হিসেবে বলতে পারি হুট করে সব দাবি সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না৷ মেনে নেয়াও সম্ভব না। এগুলোর জন্য বসার জায়গা আছে, আলোচনার বিষয় আছে। আমরা অনুরোধ করছি আমাদের সাথে বসার জন্য এবং একটি নির্দিষ্ট সময় দেয়ার জন্য। শ্রমিকদের উচিত কোম্পানির অগ্রগতিতে পাশে থাকা।
শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে—ইনক্রিমেন্ট বাড়িয়ে ইনক্রিমেন্টের এডজাস্ট টাকাগুলো দিতে হবে এবং জুনিয়র অপারেটর যারা আছে তাদের সবার বেতন সর্বনিম্ন ১৮ হাজার করতে হবে ও ঈদ বোনাস দিতে হবে। সরকারি ছুটিগুলোতে কারখানা বন্ধ দিতে হবে, এছাড়া যদি কাউকে ডিউটি করতে হয় সেক্ষেত্রে হাজিরা ডাবল দিতে হবে। দুপুরের খাবার অফিস কর্তৃপক্ষকে খাওয়াতে হবে ৷ একজনকে দিয়ে তিনজনের কাজ করানো যাবে না। জনবল বাড়াতে হবে৷ শ্রমিকদের হেনস্তা বন্ধ করতে হবে৷ প্রতিমাসের ১-৫ তারিখের মধ্যে বেতন দিতে হবে৷ টিফিন টাইম ও লাঞ্চ টাইম পরিপূর্ণ কাটাতে দিতে হবে। লাঞ্চের সময় প্রত্যেকটা গেট এক ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে৷ কেউ যদি চাকরি থেকে বিদায় নিতে চায় তা হলে তাকে পরিপূর্ণ মর্যাদা দিয়ে বিদায় দিতে হবে, কোনো রকমের হেনস্তা করা যাবে না৷ বৈষম্য দূর করে সবাইকে সমান মর্যাদা দিতে হবে৷ প্লান্টের ক্যান্টিনে বাড়তি দাম কমাতে হবে৷সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে হবে৷
