১৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বৃষ্টিতে মাটি নরম, খমেক আছে ২৮৫ কোটি টাকার বার্ন হাসপাতালের কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্দর নগরী চট্টগ্রামে প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট প্রকল্পের কাজ থমকে আছে। বৃষ্টির কারণে নগরের গোয়াছি বাগান এলাকায় পাহাড়ের মাটি নরম হওয়ায় মূল ভবনের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের সয়েল নেইলিং (খাড়া পাহাড় কেটে ঢালু করা) করা যাচ্ছেনা। এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ এখনো শুরু করতে পারেনি বলছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, চমেক হাসপাতালের গোয়াছি বাগান এলাকায় ১৫০ বেডের বিশেষায়িত ‘বাংলাদেশ-চাায়না ফ্রেন্ডশিপ বার্ন ইউনিট চট্টগ্রাম’ প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা অনুমোদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় গত বছর ১২ জুন। এর আগে একই বছরের ৯ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বার্ন ইউনিট প্রকল্পের অনুমোদন দেয় তৎকালীন সরকার। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২৮৪ কোটি ৭৬ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৫ টাকা। এর মধ্যে চীন দেবে ১৭৯ কোটি ৮৩ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ টাকা এবং সরকার দেবে ১০৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার ৯৫৫ টাকা। এছাড়া চীন থেকে আমদানিতে ট্যাক্স ভ্যাট বাবদ ৭০ কোটি টাকাসহ সংযোগ রাস্তা, সীমানা প্রাচীর, বৈদ্যুতিক সংযোগ, দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও কেমিক্যাল রিঅ্যাজেন্ট আনার খরচ ধরা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ছয় তলা ভবন, জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, ল্যাবরেটরি, অপারেশন থিয়েটার, ১০টি আইসিইউ বেড, ১০টি পুরুষ এইচডিইউ বেড, ১০টি মহিলা এইচডিইউ বেড ও ৫টি শিশু এইচডিইউ রয়েছে। এছাড়া ১১৫ বেডের ওয়ার্ডে মহিলাদের জন্য বেড রাখা হয়েছে ৪৫টি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২০২৬ সালের জুনে।
চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চমেক হাসপাতালের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে গুরুতর আগুনে পোড়া রোগীদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সংকট ও নানা সমস্যার কারণে এখানে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় না। ফলে এসব রোগীকে নিয়ে ঢাকার বিশেষায়িত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে ছুটতে হয়। সারাদেশের রোগীদের চাপ থাকায় অনেক সময় চিকিৎসকদের চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়।
এদিকে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, বার্ন ইউনিটের প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবনের বেসমেন্টের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ভবনের কলামের কাজ চলছে। ভবনের পাশাপাশি পাহাড়ে সয়েল নেইলিং, কলাম বসানো এবং রিটেইনিং ওয়ালের কাজও
শুরু হবে।
জানা গেছে, চলতি বৃষ্টির আগেই হাসপাতালের মূল ভিত্তির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ভবনের কলাম নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ১৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া ভারি বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে যাতে ভবনের ওপর না পড়ে, তাই ঢালু পাহাড়ে চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলাম বসানো হবে। এছাড়া পাইলিং করে সেখানে উন্নতমানের ঘাস লাগানো হবে। যাতে বৃষ্টি হলে তা গড়িয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্কাশন করা যায়। পরে পাহাড় রক্ষার জন্য রিটেনিং দেয়াল নির্মাণ করা হবে।

 

আরও পড়ুন