২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন’র ১০ টাকায় পুজোর বাজার

অনলাইন ডেস্ক: বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষদের উৎসবে অংশগ্রহণ প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য রাখতে না পারায় অনেকেই প্রধান উৎসবগুলোতেও আনন্দ ভাগ করতে পারে না। এসব পরিস্থিতিতে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ‘১০ টাকায় পুজোর বাজার’ এর আয়োজন করেছে। যেটা উৎসব ও সহমর্মিতা মিলিয়ে সমাজে সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে।রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় জামাল খান এক্সক্লুসিভ কনভেনশন হলে এ বাজারের আয়োজন করা হয়। এ বছরের প্রোগ্রামের স্লোগান ছিল— ‘সবাই মিলে উৎসব, সবাই মিলে বাংলাদেশ’।
বাজারের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ ও শক্তি হচ্ছে ধর্মীয় সম্প্রীতি। আজ বিদ্যানন্দের এই ১০ টাকার পুজোর সুপারশপে সেই সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ দেখছি। নামমাত্র মূল্যে নতুন শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, ফ্রক, শার্ট এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে। এই উদ্ভাবনী আইডিয়া গরিব মানুষের উৎসবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করছে এবং সমাজে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, চাল, ডাল, চিনি, নারকেল, সুজি, ডিম, তেলসহ প্রায় ২৬ ধরনের পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুপারশপ। এখানে ৫০ পয়সা দিয়ে ১ কেজি চাল, ১ টাকায় ১ পিস শার্ট, ৪ টাকায় শাড়ি, ৩ টাকায় লুঙ্গি, ৫০ পয়সায় ১ কেজি সুজি, ৩ টাকায় ১ লিটার তেল এবং ২ টাকায় ১ প্যাকেট নুডলস পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি পরিবার মাত্র ১০ টাকায় এক হাজার টাকার অধিক পণ্য নিজের পছন্দমতো ক্রয় করতে পারছে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন নিম্ন আয়ের সহস্রাধিক শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধ অংশগ্রহণ করেন। তারা মাত্র ১০ টাকায় নতুন কাপড় কিনেছেন এবং পরিবারের জন্য বাজার করেছেন। ফাউন্ডেশন তাদের আসা-যাওয়ার জন্য ফ্রি বাস সার্ভিসেরও ব্যবস্থা করেছে। ছিল নানা আনন্দ আয়োজন ও মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড ডিরেক্টর জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আজকের এই আয়োজনে দেখা যাচ্ছে, স্বেচ্ছাসেবকরা মুসলিম কিন্তু গ্রাহকদের বেশিরভাগই সনাতন ধর্মের। আমাদের কাজ সবসময়ই জাত ও ধর্ম নিরপেক্ষ। আমরা চাই, এই ধরনের উৎসবের মাধ্যমে সারা বিশ্বে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিই।’
উৎসবে অংশ নেওয়া বালা রানি বলেন, ‘আমরা ভাবতেও পারিনি দুর্গাপুজোর আগে আমাদের জন্য কেউ এত আনন্দ আয়োজন করবে। আজ আমরা সত্যিই খুব খুশি। বিদ্যানন্দ আমাদের নতুন কাপড় দিয়েছে এবং মাত্র ১ টাকায় সংসারের পুজোর বাজার করতে পেরেছি।’বাজারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান উইমেনস ইউনিভার্সিটি, বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক বিক্রেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন