১৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পরিচালনার অর্থায়ন বন্ধ : চ্যালেঞ্জের মুখে স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম মহানগরীর স্কুল শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়া করা স্মার্ট বাস সার্ভিস পরিচালনা আর্থিক সংকটে পড়েছে। বাস পরিচালনার অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ স্মার্ট বাস সার্ভিস চালু করা হয়। নগরীর পাঁচটি রুটে ১০টি দোতালা বাসে ৭০০-৮০০ শিক্ষার্থী নিয়মিত চলাচল করে থাকেন।
এদিকে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, চট্টগ্রামের শিল্প গ্রুপ জিপিএইচ ইস্পাত বাস পরিচালনার অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিআরটিসি বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক মো. জুলফিকার বলেন, বাস সার্ভিসটি চালু হওয়ার পর ২০২৪ ও ২০২৫ সালে জিপিএইচ ইস্পাতের মাসে ছয় লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এক বছর দেওয়ার পর এ বছরের শুরুতে তারা চিঠি দিয়ে অর্থায়ন করতে না পারার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে।বাসগুলোতে কোনো ভাড়া তোলা হয় না। সেখানে ভাড়ার বাক্স বসানো আছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় পাঁচ টাকা করে বক্সে ফেলবে, এমন উদ্যোগ নেওয়া ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সে টাকা পরিশোধ করে না। ফলে বাস পরিচালনার বিষয়টি আমাদের পুরোপুরি স্পন্সর নির্ভর হয়ে গেছে।
জুলফিকার বলেন, বাস সার্ভিস যেন বন্ধ না হয়, সে চেষ্টা আমরা করছি। এ বছরের শুরু থেকে জিপিএইচ ইস্পাত অর্থায়ন না করলেও আমাদের নিজস্ব খরচে বাসগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে।এ সেবা ঠিক রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথেও আলাপ চলছে, যেন ভাড়া আদায় করা যায়।
জানা গেছে, জিপিএস ট্র্যাকার, জিআইএস প্রযুক্তি, ডিজিটাল হাজিরা ডিভাইস ও আইপি ক্যামেরা স্থাপন করে এসব বাসকে ‘স্মার্ট’ স্কুল বাস নামকরণ করা হয়।এসব বাস ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বাসে ওঠা-নামার সময় অভিভাবকের ফোনে স্বয়ংক্রিয় এসএমএস দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। বাসে শিক্ষার্থীদের অবস্থানও মনিটরিং করা যায়। স্মার্ট বাস সার্ভিস পরিচালনার এ ধারণার জন্য ‘স্মার্ট জেলা উদ্ভাবন চ্যালেঞ্জ-২০২৩’ এর আওতায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, স্মার্ট বাস পরিচালনায় জিপিএইচ ইস্পাত তাদের আর্থিক পরিস্থিতির কারণে অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ায় কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, সেটা ঠিক। তবে বাসগুলো পরিচালনা বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। বাস পরিচালনা স্বাভাবিক রাখতে আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বাসগুলো ব্যবহার করে। সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছি, শিক্ষার্থীরা যেন বাস ভাড়া পরিশোধ করে। এজন্য শিক্ষার্থীরা তাদের বেতনের সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাসের ভাড়া পরিশোধ করবে, সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে আলোচনা করেছি।

 

 

আরও পড়ুন