বিনোদন ডেস্ক : জনপ্রিয় চিত্রনায়ক জসিমের জন্মদিন আজ। ১৯৫০ সালের আজকের দিনে ঢাকার নবাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পুরো নাম আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন। তিনি একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক ও ফাইট পরিচালক।মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান রয়েছে। ১৯৭২ সালে ‘দেবর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় জসিমের। এই ছবিতে তিনি নির্মাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হলেও পরিচিতি পান দেওয়ান নজরুল পরিচালিত ‘দোস্ত দুশমন’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের অভিনয় করে। তবে খলনায়ক থেকে নায়ক হন ‘সবুজ সাথী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে।আসুন এই অভিনেতা সম্পর্কে কয়েকটি অজানা তথ্য জেনে নেই
১. জসিমের আসল নাম আবদুল খায়ের জসিম উদ্দিন।
২. ১৯৭৩ সালে জসিম প্রয়াত জহিরুল হকের ‘রংবাজ’ (বাংলাদেশের প্রথম অ্যাকশন দৃশ্য যুক্ত করা ছবি) ছবিতে খলনায়ক হিসেবে অভিনেতা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন।
৩. একই পরিচালকের পরিচালনায় ‘সবুজ সাথী’ চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।
৪. মুক্তিযোদ্ধা জসিম ’৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।
৫. দেওয়ান নজরুলের ‘দোস্ত দুশমন’ ছবির মাধ্যমে জসিম আলোড়ন তোলেন। ‘দোস্ত দুশমন’ ছবিটি হিন্দি সাড়াজাগানো ফিল্ম ‘শোলে’ ছবির রিমেক।ছবিটিতে তিনি গব্বারের চরিত্র করেছিলেন। খোদ শোলে ফিল্মের নামকরা চরিত্র গব্বার সিং এর আদলে থাকা ভারতীয় খলনায়ক আমজাদ খান পর্যন্ত ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন জসিমের।
৬. জসিমের মৃত্যুর পর এফডিসিতে তাঁর নামে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়।
৭. তিনিই একমাত্র নায়ক, যিনি শাবানার সাথে একই সাথে প্রেমিক এবং ভাইরূপে চরিত্রদান করেছিলেন এবং দুটি চরিত্রই দর্শকরা খুব সাদরে গ্রহণ করেছিলেন।উদাহরণস্বরূপ, যে শাবানা ‘সারেন্ডার’ ছবিতে জসিমের প্রিয়তমা হিসেবে সফল হয়েছেন, সেই শাবানা ‘অবদান’, ‘মাস্তান রাজার’ মতো ছবিতে জসিমের বড় বোন হয়ে সফল হয়েছিলেন।
৮. জসিমই আবিষ্কার করেছিলেন আজকের নায়ক রিয়াজকে। ১৯৯৪ সালে রিয়াজ চাচাতো বোন ববিতার সাথে বিএফডিসিতে ঘুরতে এসে নায়ক জসিমের নজরে পড়েন। জসিম তখন তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। ১৯৯৫ সালে জসিমের সঙ্গে ‘বাংলার নায়ক’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করেন রিয়াজ।
৯. জসিমের প্রথম স্ত্রী ছিলেন ড্রিমগার্লখ্যাত নায়িকা সুচরিতা। পরে তিনি ঢাকার প্রথম সবাক ছবির নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে নাসরিনকে বিয়ে করেন।
১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে পরলোকগমন করেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নায়ক হিসেবেই অভিনয় চালিয়ে যান। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে ‘রংবাজ’, ‘প্রতিনিধি’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘আসামি হাজির’, ‘মহেশখালীর বাঁকে’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘ঘরের বউ’, ‘জনি’, ‘অভিযান’, ‘অশান্তি’, ‘নিষ্পাপ’, ‘লালু মাস্তান’, ‘সারেন্ডার’, ‘মাস্তান’, ‘কাজের বেটি রহিমা’, ‘কালিয়া’, ‘স্বামী কেন আসামি’ প্রভৃতি। জসিম ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মারা যান।
