৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নগর ছাড়ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোলাহলমুখর নগর ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে শেকড়ের টানে শহর ছাড়ছে মানুষ। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে। মূলত গতকাল অফিস শেষ করে অধিকাংশ মানুষ রওয়ানা দিয়েছে নিজ গন্তব্যে। নগরের প্রধান প্রবেশমুখ অলংকার, শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর, অক্সিজেন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ঘরমুখো মানুষের ভিড়।
অলংকার মোড় থেকে ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলমুখী অধিকাংশ বাস ছাড়া হয়। সেখানে যাত্রীদের ভিড় বেশি। নগরের আগ্রাবাদে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন রাজশাহীর বাসিন্দা মো. আমিরুজ্জামান। বুধবার শেষ কর্মদিবস হওয়ায় আগেভাগেই অফিস থেকে বের হয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রওনা হয়েছেন বাড়ির উদ্দেশ্যে। আমির বলেন, ছুটি পেয়েছি নয়দিন। প্রতিবছর পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হয়। এদিকে শাহ আমানত সেতুর বশরুজ্জামান চত্বরে গাড়ির জটলা দেখা গেছে।
ট্রাফিক বিভাগ জানান, বশরুজ্জামান চত্বর থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী বেশ যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। কিন্তু সেখানে কোন টার্মিনাল কিংবা পার্কিং ব্যবস্থা নেই। সড়কে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী টার্মিনাল। এ কারণে গাড়ির জটলা বেশি।
পরিবারে সদস্যদের নিয়ে শাহ আমানত সেতুর গোল চত্বরে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন পেকুয়ার আনিস উদ্দিন। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আনিস উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার ছিল ব্যাংকের শেষ কর্মদিবস। বিকেল তিনটার মধ্যে ব্যাংক লেনদেন শেষ হয়ে যায়। বললেন, ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার মজাই আলাদা। পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির প্রবেশমুখ অক্সিজেন এলাকা। খুব একটা বেশি ভিড় নেই সেখানে।
নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ জানান, ঈদ যাত্রায় যানবাহনের সুশৃঙ্খল চলাচল এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদ উপলক্ষ্যে ৪ থেকে ৬ জুন এবং ১২ থেকে ১৪ জুন ছয়দিন মহাসড়কে ট্রাক, কভার্ডভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কোরবানি পশুবাহী যানবাহন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী যানবাহন, ওষুধ, বন্দরের মালামাল পরিবহনে নিয়োজিত যানবাহন এবং গার্মেন্টস পণ্যবাহী যানবাহন এর আওতামুক্ত থাকবে।
দেরিতে ছেড়েছে ট্রেন, দুর্ভোগ : গতকাল চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। তবে নির্ধারিত সময়ে দুটি ট্রেন না ছাড়ায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময় সকাল সোয়া ৯টার পরিবর্তে দুপুর সোয়া ১২টায় ছাড়ে। অন্যদিকে চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেসও নির্ধারিত সময় বিকেল সোয়া ৫টার বদলে পৌনে ৬টায় স্টেশন ছাড়ে। যাত্রীরা সময়মতো স্টেশনে পৌঁছালেও ট্রেনের দীর্ঘ বিলম্বে তাদের অপেক্ষা করতে হয়। বিশেষ করে পরিবারসহ ভ্রমণকারীরা বেশি কষ্টে পড়েন।
রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনিসুর রহমান জানান, বিজয় এক্সপ্রেস জামালপুর থেকে দেরিতে আসায় ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজের জন্য চট্টগ্রাম থেকে ছাড়তে বিলম্ব হয়। আর ইঞ্জিনে ত্রুটি ধরা পড়ায় মেঘনা এক্সপ্রেস ছাড়তে দেরি হয়েছে। তবে বাকিগুলো নির্ধারিত সময়েই চলেছে।
এবার ঈদের সময় চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন ১৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। এছাড়া অতিরিক্ত ভিড় সামাল দিতে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে দুই জোড়া বিশেষ ট্রেনও চালু করা হয়েছে।

আরও পড়ুন