৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দেশি জাতের গরু বেশী , চট্টগ্রামে পশুর হাটে উপচে পড়া ভীড়

মোহাম্মদ জাহেদ উল্লাহ চৌধুরী: কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চট্টগ্রাম মহানগরীর গরুর হাটগুলোতে উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়েছে। বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, হাটগুলোতে উঠেছে প্রচুর গরু। যার মধ্যে দেশি জাতের গরুর আধিপত্য চোখে পড়ার মতো। গরু বাছাই, দর-কষাকষির মধ্যেই সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাটে স্থানীয় বেপারির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। হাটজুড়ে দাপট দেখাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বেপারিরা। তারা নিয়ে এসেছেন নানা আকৃতির দেশি গরু। ছোট, বড়-মাঝারি সবধরনের গরু রয়েছে হাটে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট আকৃতির দেশি গরুগুলোর দাম চাওয়া হচ্ছে ৭০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। মাঝারির দাম উঠেছে এক লাখ ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত। আর বড় আকৃতির গরু ৩ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত।
‎ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে ১৫টি গরু নিয়ে বিবিরহাট বাজারে এসেছেন বেপারি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, বিবিরহাট সব থেকে বড় হাট। তাই আমি বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরুগুলো কিনে নিয়ে প্রায় প্রতি বছর আসি। বাজার শুরু থেকে বৃষ্টি পেয়েছে। মাত্র দুটি গরু বিক্রি করতে পেরেছি। ক্রেতা খুব কম, যারা আছেন তারা দাম ঠিকঠাক বলছেন না। প্রত্যেকটা গরুতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা কম বলছেন। এরপরেও দেখে শুনে দিয়ে দিবো।
‎নগরের বাকলিয়া এলাকা থেকে বিবিরহাট গরুর বাজারে এসেছেন নাজমুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা। তিনি বলেন, আজ মূলত গরু দেখতে এসেছি। অনেক বাজার ঘুরেছি। গরুর দাম কমই মনে হয়েছে। আরও কিছুসময় দেখে গরু কিনবো।
হালিশহর থেকে গরু কিনতে আসা জাহিন ইসলাম বলেন, বাজারে প্রচুর গরু আছে, এটা ভালো দিক। দাম যাই থাকুক, দর-কষাকষি করার সুযোগ তো থাকে। আজ দেখে যাবো, যদি দরদামে মিলে তাহলে নেবো। আর নাহয় কাল-পরশু আবার এসে নেবো।
দিনাজপুর থেকে আসা বেপারি হেলাল জানান, ৯টি গরু এনেছি, এখনও একটাও বিক্রি হয়নি। লোকজন এসে দাম শুনে চলে যাচ্ছে। এখনও অনেকেই হাটে ঘুরতে আসছে। আশা করছি কাল থেকে মূল বেচাকেনা শুরু হবে।
সাগরিকা বাজার ইজারাদারের এক প্রতিনিধি জানান, আমরা ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য সবধরনের সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাজারে জাল টাকা শনাক্তকরণের মেশিন বসানো হয়েছে। সার্বক্ষণিক পশু চিকিৎসক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
‎বুধবার দুপুরে হাটগুলোতে দেখা যায়, চট্টগ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ট্রাক ভর্তি গরু নিয়ে এসেছেন বেপারি ও খামারিরা। কোরবানির গরুতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে পুরো পশুর হাট। বৃষ্টির কারণে কাদামাটি জমে গেছে অনেক হাটে। যার কারণে অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে, সাধ্য অনুযায়ী কাদামাটির ওপর বালি, মাটি, খড়কুটো দিয়ে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছেন হাট ইজারাদার ও বেপারিরা। ছোট-বড় সব ধরনের কোরবানির পশুর নিয়ে ক্রেতাদের অপেক্ষায় বসে আছেন বিক্রেতারা। ট্রাকভর্তি গরু, সাজানো পশুর সারি, উচ্চস্বরে ডাক সব মিলিয়ে যেন উৎসবমুখর পরিবেশ। কিন্তু এতসব আয়োজনের মাঝেও নেই কাঙ্ক্ষিত সেই ক্রেতা।
খামারিরা অভিযোগ করে বলেন, বছরজুড়ে নানা পরিচর্যায় কষ্ট করে বড় করেছেন কোরবানির গরু। কিন্তু এখন হাটে গরুর প্রকৃত দাম পাচ্ছেন না। লোক আসে, দেখে, দাম জেনে চলে যায়। এরমধ্যে কয়েদিনের টানা বৃষ্টি যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

আরও পড়ুন