অনলাইন ডেস্ক : সামাজিকভাবে নিয়ম মেনে বিয়ে হয় তাদের। মেয়ের জামাইকে খুশি রাখতে গ্রাম্য প্রথা অনুযায়ী দেওয়া হয় আসবাবপত্র। খুবই ভালোভাবে চলছিল তাদের সংসার। কিছুদিন যেতে না যেতেই শুরু হয় কলহ।দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এর পর থেকে তারা আলাদা থাকতে শুরু করেন।দ্বিতীয় বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতে ওই স্বামী করেন তৃতীয় বিয়ে।তত দিনে বহু চেষ্টা করেও স্ত্রীর অধিকার ফিরে না পেয়ে অনেকটা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন প্রথম স্ত্রী। সুযোগ পেয়ে স্বামীকে ধরে এনে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে আটকে রাখেন নিজের বাসায়। ফেরত চান পিতার পক্ষ থেকে দেওয়া টাকা-পয়সা।চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নে কাটাখালী গ্রামে।
এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন এসে ভিড় করে ওই বাড়িতে। পায়ে শিকল দেওয়া সেই ব্যক্তিকে দেখতে হাতিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকে আসতে শুরু করেন।স্ত্রী হাসিনা বেগম জাহাজমারা ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। স্বামী আব্দুর রহমান বুড়িরচর ইউনিয়নের রেহানিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, পারিবারিক কলহ মেটাতে কয়েকবার গ্রাম্য শালিস বসানো হলেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়নি।ইতিমধ্যে আব্দুর রহমান একাধিক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। প্রথম স্ত্রীর খরচ ও দেখভাল করেনি সে । এর জেরে, ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পাশের বাজার থেকে ধরে এনে বাঁধা হয়েছে।হাসিনা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকে আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করত। বহুবার সালিশ বিচার করেও সমাধান হয়নি। এরপর আমাকে রেখে সে আরো দুইটা বিয়ে করেছে। আমি আমার অধিকার ফেরত পেতেই তাকে ধরে এনেছি। পালিয়ে যাওয়ার ভয়ে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি।
হাসিনার বাবা-মা জানান, ছেলের পরিবার কোনো দিনও তাকে শাসন করেনি। দুই বছর ধরে মেয়ের খোঁজও নেয়নি। এখন মেয়ে তাকে ধরে এনেছে। আমরা ছেলের পরিবারকে খবর দিয়েছি। তারা এলে সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা হবে।
এদিকে খাটের ওপর শিকলে বাঁধা অবস্থায় আব্দুর রহমান তৃতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেন। তিনি প্রথম স্ত্রীর উগ্র আচরণের জন্য পরবর্তী বিয়ে করেছেন বলে জানান। তাকে ধরে এনে মারপিট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।
এই বিষয়ে জাহাজমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খোরশেদ আলম বলেন, এই বিষয়ে এখনো থানায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।





