৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চসিক মেয়র শাহাদাত পাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা

নিউজ ডেস্ক: : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন-২ শাখা থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রোববার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. ফিরোজ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়রকে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা প্রদান সংক্রান্ত ডি.ও পত্রটি এতদসঙ্গে প্রেরণ করা হলো (কপি সংযুক্ত)। বর্ণিত ডি.ও পত্রের বিষয়ে সদয় পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে বিনীত অনুরোধ করা হলো।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম ৩ লাখ ৬৯ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। পরে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা করেন শাহাদাত। তার অভিযোগ, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনের ফলাফলে ইসি কর্মকর্তারা কারচুপি করেছিলেন।
মামলার এজাহারে শাহাদাত অভিযোগ করেন, তিনটি ভোটকেন্দ্রে তার শূন্য ভোট দেখানো হলেও তিনদিন পর ২৮টি কেন্দ্রে তার শূন্য ভোট দেখানো হয়—যা অবিশ্বাস্য ও অকল্পনীয়। এছাড়া ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের ফল কারচুপির অভিযোগে তৎকালীন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাসহ ছয় জনকে আসামি করা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিন ডা. শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরীর মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেন।রায় ঘোষণার সাতদিন পর ৮ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঘোষণা সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। পরে ৩ নভেম্বর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে নির্বাচিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন শাহাদাত হোসেন।
এর আগে চসিকের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ১৯৮৯ সালে প্রথম মেয়র হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছিলেন জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। এরপর ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মেয়র ছিলেন বিএনপির মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। তিনিও প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পান। ১৯৯৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত টানা তিন দফায় মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে প্রয়াত মেয়র এবি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী একবার প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছিলেন।
এরপর ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির মোহাম্মদ মনজুর আলম এবং ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করেন। এদের কাউকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছিলেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর আদালতের রায়ে ২০২১ সালের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনকে চসিক মেয়র ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। ওই বছরের ৫ নভেম্বর থেকে তিনি চসিকের দায়িত্ব নেন।

 

 

আরও পড়ুন