৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রাম শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হবে: চসিক মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও সমন্বিত করতে প্রকৌশল বিভাগের সাথে এক সমন্বয় সভা সোমবার সকালে টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মেয়র চসিকের ৬টি জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছ থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক কার্যক্রমের হালনাগাদ তথ্য নেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় তিনি প্রধান প্রকৌশলী এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীদের মতামত গ্রহণ করে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনায় গুরুত্বারোপ করেন।
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রাম শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চাই। শীঘ্রই চসিকের ৪০ থেকে ৫০ টি সড়ক, ফুটওভারব্রীজ এবং অন্যান্য স্থাপনা উদ্বোধন করা হবে। এছাড়া, আরো ৩৬ টি প্রকল্পের কাজের দরপত্র মূল্যায়ন চলমান। তৈরি করা হচ্ছে প্রায় আড়াইশ থেকে তিনশ কোটি টাকার প্রকল্পের এস্টিমেট। আমি চট্টগ্রামে কোন ভাঙ্গা সড়ক দেখতে চাইনা। ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কারণে জনভোগান্তি যাতে সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়ে মেয়র বলেন, ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কারণে যেন শহরের সড়ক–ব্যবস্থায় ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সেই বিষয়ে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। সিডিএ থেকে প্রকল্পের মূল ডিপিপিটি সংগ্রহ করতে হবে এবং দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে যোগাযোগ রেখে কোন সড়ক তারা কাটবেন তা আগে থেকেই জানতে হবে। এ বিষয়ে অতীতে সমন্বয়হীনতার জন্য চসিকের বানানো অনেক সড়ক ওয়াসা কেটে ফেলেছে। এখন ওয়াসা কোতয়ালীর আশ-পাশের এলাকাগুলোতে যেসব রাস্তা কাটতে চাচ্ছে সেগুলো অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। হঠাত করে এসব রাস্তা কাটলে তীব্র যানজট তৈরী হবে। রাস্তা কাটার প্রয়োজন হলে তা যেন এমন সড়কে করা হয় যেখানে চসিকের নতুন রাস্তার কাজ করা হয়নি । এলোমেলোভাবে রাস্তা কাটা যাবে না এতে জনদুর্ভোগ বাড়ে।
সভায় দেওয়ানহাট ব্রিজ সম্পর্কে মেয়র জানতে চাইলে প্রকৌশলীরা জানান, ব্রিজটি অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ট্রাফিক ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিদিন কত গাড়ি ব্রিজটির উপর দিয়ে চলাচল করে তা যাচাই করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ব্রিজটি পুনর্র্নিমাণ বা বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, আমরা ৪১টি ওয়ার্ডে যে ৪১টি মাঠ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইতিমধ্যে ১১টি মাঠের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা আছে সেগুলো দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। মহসিন কলেজের মাঠ যেভাবে সংস্কার করে খেলার উপযোগী করা হচ্ছে সেভাবে আরো কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ উন্নত করে দিবে। চট্টগ্রাম কলেজের প্যারেড মাঠসহ যেসব সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পতিত জায়গা রয়েছে, সেগুলোকে উন্নয়ন করে জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করতে হবে।
বিদ্যুৎ পুল এবং লাইনের কারণে ফুটওভার ব্রিজ ও সড়কে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে সে বিষয়ে পিডিবির সাথে দ্রুত যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন মেয়র। তিনি প্রকৌশলীদের উদ্দেশে বলেন, “কোথাও কাজ করতে গিয়ে যদি স্থানীয়ভাবে কোনো বাধার মুখোমুখি হন, সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, মোহাম্মদ শাহীন-উল ইসলাম চৌধুরী, জসিম উদ্দিন, আবু সাদাত তৈয়ব, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, ফারজানা মুক্তা, রিফাতুল করিম, তাসমিয়া তাহসিন, মাহমুদ শাফকাত আমিন, শাফকাত বিন আমিন, তৌহিদুল ইসলামসহ প্রকৌশলীবৃন্দ।

আরও পড়ুন