নিজস্ব প্রতিবেদক: ৮২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) পাওনা দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৫৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে কেবল ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছেই পাওনার পরিমাণ ৭ কোটি ৬৯ লাখ ৮৫ হাজার ৫১২ টাকা।ঘাটতি মেটাতে বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে একগুচ্ছ উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বকেয়া আদায়ে চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত তাগিদ দিচ্ছেন। ক্ষেত্রবিশেষে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নিজেই ফোন করছেন।
চসিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন রাজস্ব সার্কেল ১’র অধীনে ২৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে হোল্ডিং ট্যাক্স পাওনা রয়েছে ৬ কোটি ৩৬ লাখ ১৬ হাজার ৯২২ টাকা। রাজস্ব সার্কেল ২’র অধীনে ৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ পাওনা রয়েছে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৯১ টাকা। রাজস্ব সার্কেল ৩’র অধীনে ১৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা ২ কোটি ৫৮ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭২ টাকা।
একইভাবে রাজস্ব সার্কেল ৪’র অধীনে ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা ২ কোটি ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৯৪৫ টাকা। রাজস্ব সার্কেল ৫’র অধীনে ৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ পাওনা রয়েছে ৯১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫৬ টাকা। রাজস্ব সার্কেল ৬’র অধীনে ৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা ১ কোটি ৭৩ লাখ ২৮ হাজার ৯৬৫ টাকা। রাজস্ব সার্কেল ৭’র অধীনে ৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা ১ কোটি ৬৮ লাখ ২১ হাজার ৯৮৪ টাকা এবং রাজস্ব সার্কেল ৮’র অধীনে ৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা ৫৪ লাখ ৪৯ হাজার ৭১০ টাকা।
জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনা- সবই রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল। নগর ব্যবস্থাপনায় স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে রাজস্ব বিভাগ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। নগরবাসীর সার্বিক সেবা ও নাগরিক সুবিধা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহের প্রধান উৎসই হলো রাজস্ব আয়। এ বিভাগের সঠিক পরিচালনা নগর উন্নয়নের ধারাকে সচল রাখে এবং সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আয়ভিত্তিকে শক্তিশালী করে। চসিকের রাজস্বে বড় একটি অংশ আসে হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে।
চসিকের কর বিভাগ ৮টি কর সার্কেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসব সার্কেলের মাধ্যমে মূলত হোল্ডিং ট্যাক্স মূল্যায়ন ও আদায়, সরকার নির্ধারিত কর তফশিলের আলোকে হোল্ডিংয়ের মূল্যায়ন এবং কর নির্ধারণ করা হয়।
হোল্ডিং ট্যাক্স বকেয়ায় শীর্ষে থাকা ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- সাইডার এডুকেশন সার্ভিস লিমিটেড ১ কোটি ৭২ লাখ ৯১ হাজার ৪০ টাকা, বনানী কমপ্লেক্স সিনেমা এন্ড শিপিং লিমিটেড ১ কোটি ৩৯ লাখ ৪ হাজার ৫৯৭ টাকা, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কাছে ১ কোটি ১২ লাখ ৪৮ হাজার ৫১৯ টাকা, গোল্ডেন হাইটস লিমিটেড ৯২ লাখ ৬৭ হাজার ৭৬ টাকা, মো. হাসেম চৌধুরী ৫৪ লাখ ৬৯ হাজার ৪১০ টাকা, ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলী ৪১ লাখ ৭০ হাজার ৯৫০ টাকা, শাহ আলম মেম্বার ৪১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮৬ টাকা, মেসার্স রহমান আহসান কটন স্প্রিং মিলস ৪১ লাখ ৯৬ হাজার ২৮০ টাকা, মেসার্স ইলিয়াস গার্মেন্টস ৩৬ লাখ ১৭ হাজার ২৫০ টাকা এবং খুইল্ল্যা মিয়ার কাছে পাওনা ৩৬ লাখ ২৩ হাজার ৫০৪ টাকা।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল বলেন, যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিং ট্যাক্স বকেয়া রয়েছে আমরা তাদের বারবার তাগিদ দিচ্ছি। হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের জন্য তাদের চিঠিও দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যাদের বেশি পরিমাণে বকেয়া রয়েছে, মেয়র মহোদয় নিজেই তাদের ফোন দিচ্ছেন। এরপরও যাদের হোল্ডিং ট্যাক্স বকেয়া থাকবে তাদের ১১’র ১ ধারায় নোটিশ প্রদান করা হবে।