মোহাম্মদ জাহেদ উল্ল্যাহ চৌধুরী: চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল থেকে আনা স্ক্র্যাপ লোহার একটি কনটেইনারে ‘তেজস্ক্রিয়ার উপস্থিতি’ শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের তেজস্ক্রিয়তা শনাক্তকরণে স্থাপন করা ‘মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ রেডিয়েশন ডিটেকটিভ সিস্টেমে’ এটি শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তেজস্ক্রিয়ার উপস্থিতি পাওয়ায় পর চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ওই কনটেইনারটির ছাড়পত্র স্থগিত করে আলাদা করে রেখেছে।বন্দরের ৪ নম্বর গেট দিয়ে কনটেইনারটি ছাড় করানোর সময় মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ রেডিয়েশন ডিটেকশন সিস্টেম তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত করে।ব্রাজিলের মানাউস বন্দর থেকে কনটেইনার বোঝাই জাহাজটি পানামা, নেদারল্যান্ডস ও শ্রীলঙ্কার পৃথক বন্দর ঘুরে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে গত ৩ আগস্ট।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ মারুফুর রহমান বলেন, কনটেইনার নিরীক্ষার সময় তেজস্ক্রিয় উপাদান থাকার বিষয়ে অ্যালার্ম পাওয়া গেছে। এরপর আমরা কনটেইনারটি ডেলিভারি আপাতত বন্ধ রেখেছি। পরে এটিকে পৃথক স্থানে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কনটেইনারটি পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তাদের দ্বারা পরীক্ষার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বিষয়ে পরমাণু শক্তি কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এসে কনটেইনারটিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা নির্ধারণ করবেন।
জানা গেছে, প্রাথমিক ও দ্বিতীয় পর্যায়ে স্ক্রিনিংয়ে কনটেইনারের ভেতরে থোরিয়াম-২৩২, রেডিয়াম-২২৬ এবং ইরিডিয়াম-২৯২ এই তিন ধরনের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের উপস্থিতি পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে এক মাইক্রোসিভার্ট মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা তুলনামূলকভাবে কম মাত্রার তেজস্ক্রিয়তা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, ঢাকার ডেমরার লোহা তৈরির কোম্পানি ‘আল আকসা স্টিল লিমিটেড’ ব্রাজিল থেকে ৫ কনটেইনার স্ক্র্যাপ লোহা আমদানি করে। গত ৩ আগস্ট বন্দরের জিসিবি ৭ নম্বর জেটিতে ‘এমভি মাউন্ট ক্যামেরন’ নামের জাহাজ থেকে কনটেইনারটি নামানো হয়।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘ব্রাজিল থেকে আনা স্ক্র্যাপ বোঝাই করা করা একটি কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা থাকার বিষয়টি ধরা পড়েছে। এ কারণে কনটেইনারটি বর্তমানে আটক রাখা হয়েছ।
বাংলাদেশে প্রথম তেজস্ক্রিয় পদার্থ ধরা পড়ে ২০১৪ সালে। তখন ভারতের উদ্দেশ্যে পাঠানো স্টেইনলেস স্টিলের স্ক্র্যাপ কলম্বোতে আটকানো হয়। কনটেইনারটি পরে চট্টগ্রামে ফেরত আনা হয়।
বিদেশ থেকে আসা কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্তের জন্য আমেরিকান একটি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ রেডিয়েশন ডিটেকটিভ সিস্টেম চালু আছে বন্দরে। সেটিতে তেজস্ক্রিয়তা থাকার বিষয়টি শনাক্ত করা যায়।
