১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রামে এবার দিনদুপুরে অস্ত্র উঁচিয়ে চাঁদা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় মিজান ও জসিম নামে দুই ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করছেন। তাদের কাছে বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর হয়ে ৮০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে সন্ত্রাসীরা। চাঁদা না পেয়ে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয় সন্ত্রাসীরা। শুধু মিজান, জসিমের ভবন নির্মাণ বন্ধ তা নয়।একই এলাকার আমির হোসেন এবং জাহাঙ্গীর আলম নামের দুই ব্যক্তির বাড়ি নির্মাণও চাঁদার দাবিতে বন্ধ করে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।গতকাল মঙ্গলবার রাতে বায়েজিদ থানার কুলগাঁও এলাকায় ‘যুবদল নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু গুলি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর কালের কণ্ঠকে সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র মহড়ার ভিডিও ফুটেজ পাঠায় স্থানীয়রা। বুধবার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দুই যুবক অস্ত্র উঁচিয়ে নির্মাণাধীন ভবনের গেট পার হয়ে ভেতরে যায়। একটু পর বেরিয়ে আসে।বের হওয়ার আগে একজন পিস্তল উঁচিয়ে গুলির হুমকি দেয়। অপরজনকে গেটের বাইরে একাধিকবার অস্ত্র তাক করতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানায়, একজন পথচারী সন্ত্রাসীদের দেখে নিজ উদ্যোগে পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে তাৎক্ষণিক পুলিশ পৌঁছায় ঘটনাস্থলে।এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে গেছে।সন্ত্রাসীদের ধরতে আমরা কাজ করছি।’
স্থানীয়রা জানান, অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ার এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পলাতক সন্ত্রাসী রায়হান ও ইমন গাড়িতে অপেক্ষা করছে বলে হুমকি দেয়। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ রাখতে বলে। ভুক্তভোগীরা পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা চেয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তখন তাদের গালাগাল করে বিভিন্ন রকম হুমকি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হয়।
জানা গেছে, নগরের চান্দগাঁও, বায়েজিদ, পাঁচলাইশ ও হাটহাজারী এলাকায় কেউ নতুন বাড়ি নির্মাণ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও জমি বেচাকেনা করলেই ফোন আসে সাজ্জাদের। চাঁদা নেয় তার অনুসারীরা। সেই টাকার একটি অংশ তার কাছে পৌঁছে দেয় তারা।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে এভাবেই অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন সাজ্জাদ। একসময় তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন নুরুন্নবী ম্যাক্সন ও সারোয়ার হোসেন বাবলা। পরে আরেক সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবরকে চাঁদাবাজিতে নামান সাজ্জাদ। এ তিনজন হত্যার শিকার হয়েছেন। এখন সাজ্জাদ আলীর হয়ে অপকর্ম করছেন সাজ্জাদ হোসেন। সাজ্জাদ হোসেনও কারাগারে। সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগী রায়হান, ইমনরা সামলাচ্ছে সাজ্জাদ আলীর সাম্রাজ্য।

আরও পড়ুন