অনলাইন ডেস্ক: গোপালগঞ্জের প্রতিটি গ্রামে আগামীতে কর্মসূচি পালনের কথা তুলে ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রশ্ন রেখেছেন, গোপালগঞ্জ কী শুধু আওয়ামী লীগের ঘাঁটি থাকবে?তিনি বলেন, “আমাদের ’মার্চ ফর গোপালগঞ্জ’ নিয়ে একটা গোষ্ঠী প্রশ্ন তুলেছে? একটা গোষ্ঠী বলেছে, সারাদেশে পদযাত্রা হলে গোপালগঞ্জে ’মার্চ ফর গোপালগঞ্জ’ কেন বলছি? এ কারণে নাকি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা কেন গোপালগঞ্জে গিয়েছি? গোপালগঞ্জে যাওয়া কি বারণ? ”দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের খালপাড় এলাকায় ভাষা শহীদ রফিক চত্বরে আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আগের দিন গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির পর দলটির নেতারা রাতে খুলনায় অবস্থান করেন। পরে মাসব্যাপী এ কর্মসূচির অংশ এদিন ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর পর রাতে মানিকগঞ্জে পদযাত্রা ও পথসভা করেন তারা।
গোপালগঞ্জে সমাবেশের আগে ও পরে হামলার মুখে পড়া এনসিপির আহ্বায়ক মানিকগঞ্জের এ পথসভায় বলেন, ইনসাফের ভিত্তিতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, চাঁদাবাজ মুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে কোন একক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা থাকবে না। পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
“আমরা জীবনের কোনো মায়া করি না, আমাদের শহীদ ভাইদের পরিবারের সদস্যদের যখন দেখি তখন ভাবি আমরা বেঁচে আছি তাদের অধিকার আদায়ের জন্য। আমরা জীবনের পরোয়া করি না। আমরা ভোট চাইতে আসি নাই। আমরা এক নতুন বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছি।”
তিনি বলেন, “আমরা অনেক আগেই জানিয়েছিলাম, গোপালগঞ্জে প্রোগ্রাম হবে কিন্তু সরকার যথাযথ ব্যবস্থা না করার করণেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর হামলা করেছে। আমরা কেন গোপালগঞ্জে গেলাম- তা নিয়ে একটি পক্ষ প্রশ্ন করছে। আওয়ামী লীগ যদি মাথা উচু করার চেষ্টা করে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা আবার তাদের পরাস্ত করবে “নাহিদ বলেন, বিগত সময়ে সাধারণ মানুষ, ছাত্র-আলেমদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। শুধু ইসলাম পালনের কারণে অনেককে জুলুম করা হয়েছে।”হিন্দু ভাইদের বলবো, আপনারা কোন বিশেষ দলের সম্পদ নয়, আপনারা বাংলাদেশের জনগণ। সমান অধিকার ভোগ করেন। আওয়ামী লীগই হিন্দুদের জমি দখল করেছে।“
নতুন এ দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “আমরা যখনই সংস্কার করতে চাই তখন একটি পক্ষ সংখ্যার উপর নির্ভর করে ক্ষমতা চায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু এদেশের বিচার ব্যবস্থা, শাসন ব্যবস্থা এখনও জনগণের উপযোগী হয়ে উঠেনি। এতগুলো প্রাণ নেয়ার পরও আওয়ামী লীগের কোনো অনুশোচনা নাই।
”রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের কথা যারা বলেন তারা দেখুন গোপালগঞ্জে সন্ত্রাসীরা এখনও সক্রিয়। গোপালগঞ্জে বিপ্লবীদের উপর হামলার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এদেশে আর আওয়ামী লীগের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। মুজিববাদের কবর রচনা হয়েছে।”
এনসিপির মানিকগঞ্জ জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক জাহিদুর রহমান তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বক্তব্য দেন।এনসিপির পথসভা উপলক্ষে শহরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সভাস্থল ছাড়াও আশপাশের মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি সেনাসদস্যরা টহল দেন। সভাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।।
