২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গাজায় বিমান থেকে ত্রাণ ফেলছে ইসরায়েল, যোগ দেবে আরো তিন দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েল জানিয়েছে শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে তারা গাজায় বিমান থেকে প্যারাস্যুটের মাধ্যমে জরুরি ত্রাণ ফেলেছে। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজায় মানবিক সংকট তীব্র হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, গাজায় বিমান থেকে সাহায্য বিতরণ পুনরায় শুরু করা হয়েছে। এটি “মানবিক সহায়তা বাড়ানো” এবং “ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির অভিযোগ খণ্ডন” করার জন্য নেওয়া একাধিক পদক্ষেপের অংশ।
এই ঘোষণা এসেছে এমন সময়ে, যখন ১০০টিরও বেশি সাহায্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছে যে গাজাজুড়ে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, গাজার প্রায় প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন একাধিক দিন ধরে কোনো খাবার পাচ্ছেন না।
এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ঘোষণা দিয়েছে যে তারা অবিলম্বে গাজায় বিমান থেকে সাহায্য সরবরাহ পুনরায় শুরু করবে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বিদেশি দেশগুলোকে গাজায় সাহায্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইউএই-র পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এক্স-এ লিখেছেন, গাজায় মানবিক পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত সংকটাপন্ন ও অভূতপূর্ব। ফিলিস্তিনিদের জীবনরক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছে দিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সর্বদা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সবচেয়ে প্রয়োজনীয়দের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেব। বিমান থেকে সাহায্য বিতরণ অবিলম্বে পুনরায় শুরু হচ্ছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার জানিয়েছিলেন, যুক্তরাজ্য জর্ডানের সঙ্গে সমন্বয় করে গাজায় বিমান থেকে সাহায্য পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এই ঘোষণার আগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি সদস্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন।জর্ডানকে সাহায্য করতে ব্রিটিশ সামরিক পরিকল্পনাকারী ও সরবরাহ বিশেষজ্ঞদের একটি ছোট দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) রবিবার (২৭ জুলাই) একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মানবিক উদ্দেশ্যে গাজায় এলাকা ভিত্তিক সামরিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বিরত রাখা হবে। আজ (রবিবার) থেকে স্থানীয় সময় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই বিরতি কার্যকর থাকবে।
আইডিএফ-এর বক্তব্য অনুযায়ী, এই বিরতি গাজার সেই সব এলাকায় প্রযোজ্য হবে, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী এখনও অভিযান চালাচ্ছে না, যেমন আল-মাওয়াসি, দেইর আল-বালাহ ও গাজা সিটি। নতুন নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা প্রতিদিন কার্যকর থাকবে। এই সিদ্ধান্ত জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে আলোচনার পর নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, গাজাজুড়ে জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থার কনভয়গুলো নিরাপদে খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দিতে পারবে। এ জন্য প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট নিরাপদ রুট খোলা রাখা হবে।

আরও পড়ুন