৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে। আগামীর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছে বিএনপি।মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এককভাবে রাজত্ব কায়েম করেছিল। আমাদেরকে গণতন্ত্র পরিপূর্ণভাবে পুন:প্রবর্তন করতে হবে। সেই গণতন্ত্র প্রবর্তনের জন্য আমাদের মনমানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ভিন্নমতের প্রতি সম্মান জানাতে হবে।’
শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন অনিবার্য ছিল উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে নিগৃহীত হয়েছে, মানুষের উপর যে অবিচার হয়েছে, ৬০-৭০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, কয়েক হাজার লোক গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, জেলখানার মধ্যে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। গত ৫ আগস্ট আমি নিজেও কারাগারে বন্দি ছিলাম।’তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে প্রথম দিন থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞ টিম এ বিষয়ে কাজ করছে।তিনি আরও বলেন, ভেটেরিনারি সায়েন্স, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি ইত্যাদি খাতকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। আর সেটাই হবে নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য।’
বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের জনগণের মনোজগতে যে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, যে আকাঙ্ক্ষা জেগেছে, যে প্রত্যাশা জেগেছে, সেটা আমাদেরকে ধারণ করতে হবে। রাজনীতিবিদদের ধারণ করতে হবে। রাজনৈতিক দলকে ধারণ করতে হবে। যারা ধারণ করতে পারবে না, তাদের কোন রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই।’
তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের যে ত্যাগ-এই ত্যাগের প্রতি আমরা যদি সম্মান জানাতে চাই, তাহলে যার যার অবস্থান থেকে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে এই ত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। আমাদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। কথাবার্তায়, আচার-আচরণে গণতান্ত্রিক হতে হবে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন আনতে হবে।’
সিভাসু অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ, সিভাসু’র পরিচালক (বহিরাঙ্গণ কার্যক্রম) প্রফেসর ড. এ. কে. এম. সাইফুদ্দিন,পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রাশেদুল আলম এবং পরিচালক (পিআরটিসি) প্রফেসর ড. এ. কে. এম. হুমায়ুন কবির। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সিভাসুর ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত বিন জাহাঙ্গীরও বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, ‘তোমরাই হলে দেশের ভবিষ্যৎ। তোমরা যদি হেরে যাও, তাহলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। তোমাদের হারলে চলবে না। রাষ্ট্র মেরামতের দায়িত্ব, আগামী প্রজেন্মের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব তোমাদেরকেই নিতে হবে। এবং তোমরাই পারবে গণতন্ত্রের স্থায়ী রূপ দিতে। আর সেটা যদি সম্ভব হয়, তাহলে এই বাংলাদেশ হবে সুস্থ, সুন্দর, স্বাধীন ও নিরাপদ বাংলাদেশ। আর এমন বাংলাদেশ যদি আমরা গড়তে পারি, তাহলে জুলাই শহিদদের আত্মা শান্তি পাবে। জুলাই বিপ্লব সার্থক হবে।’

আরও পড়ুন