১০ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আরএসজিটির বাংলাদেশে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা দুঃখজনক : বিডা চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) অপারেশনের দায়িত্ব নেওয়া আরএসজিটির (রেড সি গেটওয়ে টারমিনাল) বাংলাদেশে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি (নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল) চার নম্বর গেটে বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ম্যাগনেটিজম টেক লিমিটেডের পরিচালিত শিপিং ও লজিস্টিক্স অনলাইন ডেস্কের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময় বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আশিক চৌধুরী বলেন, আরএসজিটি আমাদের বাংলাদেশে প্রথম প্রাইভেট অপারেটর হিসেবে এসেছে। উনারা বাইরে অন্য কয়েকটি পোর্ট অপারেট করেছেন। ডিপি ওয়ার্ল্ড বা এপিএমের মতো ৬০-৭০টি দেশে অপারেট করার অভিজ্ঞতা তাদের নেই। তবে বেশ কিছু দেশে তারা পোর্ট অপারেট করেন। কিন্তু আরএসজিটির যে অভিজ্ঞতা হয়েছে বাংলাদেশে সেটা একদমই সুখকর না।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, অনেক ধরনের জটিলতার মধ্যে উনারা (আরএসজিটি) পড়েছেন। এর একটা বড় কারণ হলো- আমাদের সাইটে, বাংলাদেশ সরকার কখনো ইন্টানেশনাল টার্মিনাল অপারেটরে সঙ্গে ডিল করিনি। পরে আমরা আসার পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা তাদের হ্যাবিলেটেড করার চেষ্টা করছি। তবে অনেকগুলো স্টেপে গিয়ে জিনিসগুলো আটকে গেছে। আজকেও বেশকিছু জিনিস নিয়ে উনারা সাফার (ভোগান্তি) করছেন।
প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে লোন নিতে চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরএসজিটি যে পরিমাণ ভলিউম গ্রোথ আশা করেছিলো, সে পরিমাণ ভলিয়ম গ্রোথ আসলে হয়নি। তারা ফাইন্যান্সিং লোকালি নিবেন নাকি ইন্টারন্যাশনালি নিবেন, সেটি কমপ্লিটলি ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্রাকচারাল ডিসিশান। উনারা যদি বাংলাদেশ থেকে লোন নেয়, উনারা বাংলাদেশকে লোনের টাকা ফেরত দিবেন। এমন না যে, বাংলাদেশ থেকে লোন নিলে টাকা দেশের বাইরে চলে যাবে। এটি ব্যাংকিং রেগুলেশনওয়াইজ পসিবল।
তিনি বলেন, সিডিডিএল (চিটাগং ড্রাই ডক লিমিটেড) একটি এক্সাম্পল সেট করেছে। ইনফ্যাক্ট সিডিডিএল এটি প্রুফ করেছে- যখন এপ্রিল-মে মাসে এসেছিলাম তখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, দেশে একটা অপারেটর তো খুব ভালো করছে। তারা ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন টিইউএস করেছে। তাহলে কেন আপনারা শুধু শুধু বলছেন, এখানে অপারেটর বদলাতে হবে। এখনতো আমরা চেঞ্জ করে প্রুফ করে দিলাম, খুব ভালোটা যে কত ভালো তা আমরা নিজেরাই জানি না। আমাদের এই ক্ল্যারিটিই নাই, এই পোর্ট থেকে ম্যাক্সিমাম কতটুকু ভলিউম পাওয়া সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, আইএফসির (ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন) রিপোর্ট বলছে, এই পোর্ট থেকে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন টিইউএস পাওয়া সম্ভব। গতবছর আমাদের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিলো, তা ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন টিইউ। টেকনোলজি ও বেস্ট প্র্যাকটিস আসলে এটি তার চেয়ে উপরে চলে যাবে। আমার মনে হয় এটি নিয়ে সাবজেক্টিভ জাজমেন্ট না করা। যেমন- সিডিডএল ভালো করছে, এটা বেস্ট কিনা সেটা বলার ক্ষমতা আসলে যারা এক্সপার্ট তাদের কাছেই আছে। আর যারা টপ র‌্যাংকে গিয়ে অভ্যস্থ তাদের কাছে গিয়েই আমাদের বুঝতে হবে।
সফটওয়্যার উদ্বোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একটা ফ্যান্টাস্টিক ইনেশিয়েটিভ। সবকিছু অটোমেটেড হয়ে যাবে। অটোমেটেড হওয়ার দুইটা সুবিধা আছে। প্রথম সুবিধা হলো- যে কাজটি করতে দুই দিন থেকে এক সপ্তাহ লেগে যেতো, স্বশরীরে অফিসে যেতে হতো। সেটি এখন একটা বাটন ক্লিক করে ঘরে বসে করতে পারবে। সুতরাং সময় সিগনিফিশেন্টলি কমে আসছে। একই সাথে আমরা যে অভিযোগটা অনেকের কাছ থেকে পাই, সেটা হলো বিভিন্ন হ্যারাসমেন্ট হয়। সেটাও অনেকাংশে কমে আসবে। এছাড়া একটা বাটন ক্লিক করে পেমন্ট করে দেওয়ার কারণে করাপশন ইনডেক্সে আমাদের রেটিং কমে আসবে। যতবেশি অটোমেট করা যাবে, তত আমাদের জন্য এডভান্টেজ (সুবিধা)।

আরও পড়ুন