৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সুদানে আরএসএফের ড্রোন হামলায় শিশুসহ নিহত ৭৯

অনলাইন ডেস্ক : সুদানের দক্ষিণ কুর্দোফান রাজ্যে আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪৩ জনই শিশু। এছাড়া আরো ৩৮ জন আহত হয়েছে বলে শুক্রবার সুদানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।দক্ষিণ কুর্দোফান রাজ্য সরকার জানায়, নিহতদের মধ্যে চারজন নারী রয়েছে। বৃহস্পতিবার পশ্চিম সুদানের কলোজি শহরে চালানো ওই হামলায় একটি ড্রোন চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো একটি কিন্ডারগার্টেন, একটি হাসপাতাল এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানে। রাজ্য সরকার এ হামলাকে আরএসএফ-সমর্থিত সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-নর্থের ‘নৃশংস অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে আটজন নিহত হওয়ার কথা জানানো হলেও পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৯-এ পৌঁছায়।
রাজ্য সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় যেন তারা এসব লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়, আরএসএফকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং তাদের মিত্রদেরও এসব অমানবিক অপরাধের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনে।জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ এই হামলাটিকে ‘শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ উদাহরণ’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ জানায়, নিহতদের মধ্যে ৫ থেকে ৭ বছর বয়সী অন্তত ১০ জনের বেশি শিশু রয়েছে।
ইউনিসেফের সুদান প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুরা যেন কখনোই যুদ্ধের মূল্য না দেয়। আমরা সব পক্ষকে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার এবং যারা মরিয়া হয়ে সাহায্যের প্রয়োজন তাদের কাছে মানবিক সহায়তা নিরবচ্ছিন্নভাবে পৌঁছানোর সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই।
ইউনিসেফ জানায়, নভেম্বরের শুরু থেকে কুর্দোফান অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে অবনতি হয়েছে, যার ফলে সহিংসতা বেড়ে গেছে এবং মানবিক সংকট তীব্রতর হয়েছে। গত এক মাসে উত্তর ও দক্ষিণ কুর্দোফান থেকে সহিংসতা এড়াতে ৪১ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে।হামলা নিয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সুদানের ১৮টি রাজ্যের মধ্যে আরএসএফ পশ্চিমাঞ্চলের দারফুরের পাঁচটি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে উত্তর দারফুরের কিছু উত্তরাঞ্চল এখনো সেনাবাহিনীর হাতে। অন্যদিকে সেনাবাহিনী বাকি ১৩টি রাজ্যের দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব ও কেন্দ্রাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকাতেই নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে, যার মধ্যে রাজধানী খার্তুমও রয়েছে।সুদানি সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।

আরও পড়ুন