ক্রীড়া ডেস্ক: অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে একদিনও টিকতে পারলো না স্বাগতিক বাংলাদেশ। রবিবার (২০ এপ্রিল) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১৯১ রানে অলআউট হয়েছে টাইগার ক্রিকেটরা। ৬১ ওভার খেলতে সক্ষম হয়েছেন তারা। তাতে মুমিনুল হকের ৫৬ এবং অধিনায়কের ৪০ রানেই উল্লেখযোগ্য।
দিনের শুরুতে সাবধানী শুরু করেন সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়। অপ্রয়োজনীয় কোনো ঝুঁকি নেননি তারা। তারপরও ভিক্টর নিয়াউচির প্রথম ওভারেই ছন্দ হারান সাদমান। এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের গুড লেংথের বলে খোঁচা মেরে গালি অঞ্চলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিয়েছেন সাদমান ইসলাম। এ দিন ২৩ বলে ১২ রান আসে তার ব্যাটে। ওপেনিং জুটিতে ৮.৩ ওভারে বাংলাদেশ করে ৩১ রান।
প্রথম ওভারের মতো নিজের দ্বিতীয় ওভারেও উইকেটের দেখা পান ভিক্টর নিয়াউচি। দলীয় ৩২ রানের মধ্যে জয়কেও ফেরান তিনি। তার গুড লেংথে আসা অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষকের মুঠোয় ক্যাচ তুলে দেন ডানহাতি ওপেনার জয়। ৩৫ বলে ১৪ রান আসে তার ব্যাটে।
৩২ রানে দুই উইকেট পড়ার পর বেশ শক্তভাবে দলের হাল ধরেন মুমিনুল এবং শান্ত। দুজনে মিলে ৭৭ বলে ৫২ রানে অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে মধ্যাহ্নভোজ বিরতিতে যান। এই সেশনে বৃষ্টি খানিকটা বাগড়া দিলেও সেটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি।
দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু হলো লাঞ্চের সময় শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা পর। এরপর খেলা শুরু হলে পুরো উদ্যমে খেলতে থাকে বাংলাদেশের দুই ব্যাটার শান্ত এবং মুমিনুল। তবে দলীয় ৯৮ রানে শান্তর উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুমিনুলের সঙ্গে শান্তর ৬৬ রানের জুটি ভাঙেন মুজারাবানি। জিম্বাবুয়ের এই পেসারের শর্ট বলে কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ওয়েসলি মাধভেরের মুঠোয় ক্যাচ তুলে দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। হাফ সেঞ্চুরি করা হলো না তার। ৬৯ বলে ছয়টি চারে ৪০ রান করে শান্ত।
বাংলাদেশ দলীয় শতক পার করার একটু পর ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার শর্ট বলে মিড উইকেটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে ব্রায়ান বেনেটের মুঠোয় ক্যাচ দেন এই ব্যাটার। ১৮ বলে চার রান করেন তিনি। ১২৩ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
মুশফিক ফিরে গেলেও জাকের আলীকে নিয়ে ১০০ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২২তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল। ব্লেসিং মুজারাবানিকে স্লিপ কর্ডন দিয়ে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে ওয়েসলি মাধেভেরেকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৫৬ রান করা মুমিনুল।
নতুন স্পেলে বোলিংয়ে ফিরে একটানা শর্ট বল করে যাচ্ছিলেন ব্লেসিং মুজারাবানি। এতে সাফল্য পেতেও দেরি হয়নি মুজারাবানির। তার লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এ দিন এই অলরাউন্ডার করেন চার বলে এক রান। মাত্র ১৪ রানের মধ্যে তিনটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
জাকের আলীর সঙ্গে জুটি বাধতে উইকেটে আসেন তাইজুল ইসলাম। কিছুক্ষণ উইকেটে থেকে বিদায় নেন তিনিও। ১৯ বলে তিন রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। ১৪৬ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে ৪৮.৩ ওভারে দলীয় ১৫০ রান পূরণ করে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশনে ২৬ ওভারে ৭০ রান যোগ করতে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর জাকের আলীর সঙ্গে ৪১ রানের জুটি গড়েন হাসান মাহমুদ। এই জুটিও ভাঙেন ব্লেসিং মুজারাবানি। দারুণ এক ইনসুইংয়ে হাসানকে বোল্ড করেন তিনি। ফেরার আগে ৩০ বলে ১৯ রান করেন হাসান।
দলীয় ১৯১ রানে ফিরে যান জাকের আলী অনিকও। ৫৯ বলে ২৮ রান করেন এই উইকেটরক্ষক। ওয়েসলি মাধেভেরেকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন জাকের। শেষ ব্যাটার নাহিদ রানাকেও বোল্ড করেন মাধেভেরে।
জিম্বাবুয়ের ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও ব্লেসিং মুজারাবানি ৩টি করে উইকেট নেন। এছাড়াও ওয়েসলি মাধেভেরে ও ভিক্টোর নিয়ুচি ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
