অনলাইন ডেস্ক : লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনগাজিতে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্কুলে যাওয়ার পথে এক বাবা ও তার সাত সন্তানকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুরো দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভয়াবহ ভিডিওতে দেখা গেছে, বেনগাজির তালহিয়া-হাওয়ারি এলাকায় পার্ক করা একটি গাড়ির ভেতরে নিহত পরিবারের দেহ পড়ে আছে।শিশুরা তখনও স্কুলের ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় ছিল এবং তাদের ব্যাগ গাড়ির ভেতরেই ছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তাদের খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে একে-৪৭ পিস্তলও উদ্ধার করা হয়, যা নিহত পিতার হাতেই পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।তবে ঘটনাটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
কেউ কেউ মনে করছেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং পুরো পরিবারকে টার্গেট করা হয়েছিল। আবার অন্য একটি ধারণা বলছে, হয়তো বাবা নিজেই সন্তানদের গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। এখনো পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।এই মর্মান্তিক ঘটনার পর লিবিয়াজুড়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
অনেকে সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের রহস্য উন্মোচন করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ঘটনার পর লিবিয়ার পার্লামেন্ট কর্তৃক নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী ওসামা হাম্মাদ এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত তদন্ত শুরু করার জন্য। তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ ও উদ্দেশ্য উদ্ঘাটন করে জনগণের সামনে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। আইন অনুযায়ী ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা রোধে এটি অত্যন্ত জরুরি।’
মানবাধিকার কর্মী ইসরা আল-মাগরেবি বলেছেন, ‘এই অপরাধ উপেক্ষা করা যাবে না।এমন ঘটনা সমাজে ভয় ও অস্থিরতা ছড়িয়ে দেয়।’ তিনি আত্মহত্যার ধারণা উড়িয়ে দিয়ে দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানান। একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এ দৃশ্য সহ্য করার মতো নয়।’স্কুলের পোশাক পরা শিশুরা নির্মমভাবে খুন হয়েছে, অথচ কোনো কর্তৃপক্ষ এখনো পদক্ষেপ নেয়নি।’ তিনি আরো অভিযোগ করেন, ‘রহস্যজনকভাবে এ ধরনের অপরাধ বারবার ঘটছে, অথচ অপরাধীরা রেহাই পাচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’সূত্র : দ্য লিবিয়া অবজারভার
