অনলাইন ডেস্ক : দলীয় নেতা-কর্মীসহ সমগ্র দেশবাসীর বহু প্রতীক্ষার পর ঘনিয়ে আসছে ঐতিহাসিক সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রায় দেড় যুগের নির্বাসিত জীবন শেষে একমাত্র কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে ঢাকায় আসবেন তিনি। বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে তারেক রহমান রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন।উড়োজাহাজটির ঢাকায় অবতরণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিট।
বিএনপি নেতা-কর্মীরা তাদের শীর্ষনেতা ও দলের কান্ডারি তারেক রহমানের এ স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে চান। এজন্য বিমানবন্দরে কিংবা তার আশপাশ এলাকায় লাখ লাখ মানুষের জমায়েতের মাধ্যমে নজিরবিহীন গণসংবর্ধনার আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। প্রিয় নেতাকে বরণ ও স্বাগত জানাতে বিএনপির উদ্যোগে দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে আহ্বায়ক ও রুহুল কবির রিজভীকে সদস্যসচিব করে একটি সংবর্ধনা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ রাজধানীতে নেওয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। এ লক্ষ্যে সালাহউদ্দিন ও রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বিমানবন্দর এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এ প্রতিনিধিদলে ছিলেন।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার আয়োজন হবে ‘ঐতিহাসিক এবং মানুষের উপস্থিতি হবে স্মরণীয়’ বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, আমরা চাই তারেক রহমানের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসের সব দৃষ্টান্ত ছাড়িয়ে যাক। আগামী ৫৫ বছরের ইতিহাসেও যেন এমন কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা আর না ঘটে, সেভাবেই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার আয়োজন চলছে। সারা দেশের মানুষ এ দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। দীর্ঘ ১৭ বছরের কষ্টের নির্বাসিত জীবন শেষে তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে ফিরছেন। তাঁকে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ নানা যানবাহনে করে লাখ লাখ মানুষের সমাগমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।এ উপলক্ষে গতকাল দেশের বিভিন্ন রুটে স্পেশাল ট্রেন/অতিরিক্ত বগি রিজার্ভেশনের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তথা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদন জানানো হয়েছে।সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, এ দেশের গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ এবং আগামী দিনে যিনি বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন- তাঁকে দেখার জন্য দেশের সমস্ত জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে করতে আমরা গণতন্ত্রকে অবমুক্ত করতে পেরেছি। এই ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগ্রামে টানা ১৬-১৭ বছর তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
‘তারেক রহমানকে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকা- নাকি অন্য কোথাও সংবর্ধনা দেওয়া হবে’- এমন প্রশ্নের জবাবে দলের স্থায়ী কমিটির এ নেতা বলেন, আমরা জায়গাগুলো দেখছি। যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাঁকে এক নজর দেখার জন্য ও কথা শোনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে- এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই আমরা ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। তবে জনদুর্ভোগের বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে। জনদুর্ভোগ যাতে না হয়, সেটাও বিবেচনায় আছে। আমরা সম্ভাব্য স্থানগুলো পরিদর্শন করছি, চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা জানানো হবে।
গত শুক্রবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, আগামী ২৫ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি নিজেও দেশে ফেরার এ তারিখ নিশ্চিত করেন।
এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য ব্রিটিশ পাসপোর্ট নয়, বাংলাদেশি ট্রাভেল ডকুমেন্ট ব্যবহার করছেন।যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, ১৮ ডিসেম্বর তারেক রহমানের নামে একটি ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর এ ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করেছিল তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে ব্রিটিশ পাসপোর্ট গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এ বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়।
এ বিষয়ে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ এবং জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক কামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দেবে।’
দলীয় সূত্র জানান, তারেক রহমান ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে মেয়ে জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাংলাদেশে ফেরার কথা রয়েছে।সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।




