বাঁশখালী প্রতিনিধি: ভারতীয় এক নাগরিকসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে কোস্টগার্ড ও সেনাবাহিনীর যৌথ দল। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টায় বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল এলাকায় একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে কাঠের ছোট নৌযানকে যান্ত্রিক ‘ট্রলিং ট্রলারে’ রূপান্তর করে অবৈধভাবে গভীর সাগরে মাছ শিকারের সরঞ্জাম ও মাদক পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে কোস্টগার্ড।
গ্রেফতার চারজন হলেন- অমল চন্দ্র (৪৫), নাথন বিশ্বাস (৬০), আকাশ বিশ্বাস (৩৫) ও পণ্ডিত বিশ্বাস (৩৮)। এদের মধ্যে পণ্ডিতের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশপরগণা জেলায়। এছাড়া অমলের বাড়ি বরগুনা জেলায়, নাথনের বাড়ি খুলনার মোংলায় এবং আকাশ সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা। এদিকে গ্রেফতার তিনজনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট রাফিদ-আস-সামি জানিয়েছেন।
কোস্টগার্ডের খবর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাঁশখালীর শেখেরখীলের বাসিন্দা মান্নান মিয়ার গুদামে বসে চারজন ট্রলিং জাল তৈরি করছিল। এদের মধ্যে ভারতের নাগরিক পণ্ডিত বিশ্বাস কাঠের নৌকায় ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের মূল হোতা এবং বাকি তিনজন কারিগর। ওই গুদাম থেকে দেশে নিষিদ্ধ ৭টি ট্রলিং জাল এবং ইয়াবা-গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।এছাড়া গুদামের মালিক মান্নান মিয়ার বাড়িতে তল্লাশি করে পণ্ডিত বিশ্বাসের ভারতীয় পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, কাঠের তৈরি ছোট ট্রলারকে অবৈধভাবে যান্ত্রিক ‘ট্রলিং ট্রলারে’ রূপান্তর করে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় ছোট ফাঁসের ‘বেহুন্দি জাল’। আধা ইঞ্চি ফাঁসের এসব জালে সহজেই ধরা পড়ে গভীর ও অগভীর সাগরের রেণু, ডিমওয়ালা মা মাছ এবং মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য বিভিন্ন জলজ প্রাণী। এভাবে শিকার অব্যাহত রাখার কারণে বঙ্গোপসাগরে মাছের প্রজনন কমে যাবার পাশাপাশি সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
এদিকে চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে কোস্টগার্ডের সদর দফতরের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার অনীক মাহমুদ জানান, ভারতীয় নাগরিক পণ্ডিত বিশ্বাস প্রায় দুই বছর ধরে বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করে মাছ ধরার কাঠের নৌযানে ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ করে আসছিলেন। ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। প্রায় একবছর অবস্থানের পর ভারতে ফিরে যান। এরপর গত ২ মে আবারও একই স্থলবন্দর দিয়ে তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। প্রথমে বরগুনা জেলার পাথরঘাটায় এবং পরবর্তীতে গত ২৫ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অবস্থান করে পণ্ডিত মাছ ধরার নৌযানে ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ করে আসছিলেন।